জীবনের যুদ্ধে হার মানলেন বর্ষীয়ান পরিচালক তরুণ মজুমদার। গত ১৪জুন থেকে কিডনির সমস্যা নিয়ে এস এস কে এম হাসপাতালের উডবার্ণ ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন তিনি।তাঁর চিকিত্সার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করা হয়েছিল।দীর্ঘ ২২ বছর ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন, সাথে ফুসফুসেও সমস্যা দেখা দিয়েছিল তাঁর। রবিবার (৩রা জুলাই) স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা রয়েছিল।সোমবার সকাল ১১.১৭ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দাদার কীর্তি, বালিকা বধূ, শ্রীমান পৃথ্বীরাজের মত সাড়া ফেলে দেওয়া ছবির পরিচালক।
১৯৩১ সালের ৮ জানুয়ারি বাংলাদেশের বগুড়ায় জন্ম হয় তরুণ মজুমদারের। তাঁর বাবা বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। কেমিস্ট্রির ছাত্র হলেও সিনেমা তৈরির ঝোঁক ছিল বরাবরই।প্রায় ষাট বছরের দীর্ঘ কেরিয়ার তাঁর। ১৯৫৯ সালে 'চাওয়া-পাওয়া' দিয়ে ছবির জগতে পা রাখেন তরুণ মজুমদার, ১৯৬২ সালে কাচের স্বর্গ বানিয়ে প্রথম জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। তাঁর পরেও আরো চারটি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৯০ সালে ভারত সরকারের 'পদ্মশ্রী' সম্মানে ভূষিত হন। ২০১৮ সালে শেষ ছবি তৈরী করেন ভালোবাসার বাড়ি।তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া বাংলা চলচ্চিত্র জগতে।
তরুণ মজুমদারের প্রয়াণে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শোকবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, "বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক তরুণ মজুমদারের প্রয়াণে আমি গভীর শোকপ্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। ভিন্নধারার রুচিসম্মত সামাজিক চলচ্চিত্র নির্মাণে তরুণ মজুমদার উজ্জ্বল নিদর্শন রেখে গিয়েছেন। তাঁর ছবিতে রবীন্দ্রসংগীতের প্রয়োগ দর্শককে আবিষ্ট করে রাখে।তরুণ মজুমদার পরিচালিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র বালিকা বধূ, শ্রীমান পৃথ্বীরাজ, ফুলেশ্বরী, দাদার কীর্তি, ভালবাসা ভালবাসা, সংসার সীমান্তে, গণদেবতা, শহর থেকে দূরে, পথভোলা, চাঁদের বাড়ি, আলো ইত্যাদি উল্লেখের দাবি রাখে। তিনি পদ্মশ্রী, জাতীয় পুরস্কার, বিএফজেএ পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। তাঁর প্রয়াণ চলচ্চিত্র জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি তরুণ মজুমদারের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।"