লাহোর, ৫ সেপ্টেম্বর: কাশ্মীর (Kashmir) কারবালায় (Karbala) পরিণত হয়েছে। অখণ্ড ভারত('akhand bharat') গড়ার লক্ষ্যে কাশ্মীরের এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে দিল্লির সরকার। হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চক্রে এভাবেই ভারতকে কটাক্ষ করলেন পাকিস্তানের জামাতি ইসলামের (Jamaat-e-Islami) প্রধান সিরাজুল হক (Sirajul Haque)। এখন কাশ্মীরের যা পরিস্থিতি তা ১৯৪৭-এর আগের ভারতের প্রতিচ্ছবিকেই মনে করিয়ে দিচ্ছে। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা (Article 370) রদ করার পরে পরেই ভারতের সঙ্গে যাবতীয় সৌজন্যের সম্পর্কে ইতি টেনে দেয় পাকিস্তান। এরপর যেনতেন প্রকারেণ জম্মু ও কাশ্মীরকে নিজেদের বন্ধুভাবপন্ন করে তোলার জন্য দিল্লির সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলার চেষ্টা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। জাতিপুঞ্জের সাধারণ সবাতেই ভারতের নিন্দায় সরব হয়েছে। তবে লাভ কিছু হয়নি।
মুসলিম বিশ্ব থেকে শুরু করে আমেরিকা মায় প্রিয় বন্ধু চিনও ইসলামাবাদকে এ বিষয়ে কোনও ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ফিরে আসি কারবালা প্রসঙ্গে, কারবাল হল সেই ঐতিহাসিক শহর যেখানে দ্বিতীয় উমাইয়া খলিফা ইয়াজিদের সঙ্গে শেষ নবি হযরত মহম্মদ (সাঃ) এর নাতি হুসেনের সঙ্গে যুদ্ধ। এই যুদ্ধে হুসেন শহিদ হয়েছিলেন। যুদ্ধ করতে গিয়ে নানারকম বিপর্যয় ও প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়তে হয়েছিল হুসেনকে। এই কারবালা শহরটি রয়েছে মধ্য ইরাকে। রাজধানী বাগদাদের একেবারে দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তেই এই শহরের অবস্থান। সেই দ্বিতীয় উমাইয়া খলিফা ইয়াজিদের সঙ্গে হুসেনের যুদ্ধের প্রসঙ্গ মনে করাতেই কারবালাকে উদাহরণ হিসেবে টেনেছেন জামাত প্রধান। তাঁর মতে তৎকালীন কারবালার যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল এখন সেই অবস্থা কাশ্মীরের হচ্ছে। এককথায় যা ভয়ঙ্কর। আরও পড়ুন-লন্ডনে ভারতীয় দূতাবাসের বাইরে প্রতিবাদের নামে ভাঙচুর পাকিস্তানের সমর্থকদের, কাশ্মীর নিয়ে বিক্ষোভে গিয়ে ভারতীয় দূতাবাসে আক্রমণ (দেখুন ভিডিও)
হুরিয়তা নেতাদের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে সিরাজুল হক বলেন, ‘কাশ্মীর জ্বলছে। প্রিয়জনের মৃতদেহকে পূর্ণ মর্যাদায় দাফন করার সুযোগও পাচ্ছেন না সেখানকার বাসিন্দারা। তাঁরা প্রায় বাধ্য বাড়ির মধ্যে কোনওক্রমে দাফন প্রক্রিয়া সারছেন। বাড়িতেই প্রিয়জনের কবর দেওয়া হচ্ছে। এই মানবাধিকার ধ্বংসের যে প্রক্রিয়া এখন কাশ্মীরে চলছে তা বন্ধ করার জন্য কোনও ব্যবস্থাই নেই। এক কথায় অখণ্ড ভারতের ভাবনাই কাশ্মীরকে কারবালায় পরিণত করেছে।’ এই প্রসঙ্গে পাকিস্তান সরকারের কাছে বেশকিছু বিতর্কিত দাবিও করেছেন জামাত প্রধান সিরাজুল হক। তিনি বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিমলা চুক্তি ও লাহোর ঘোষণাপত্র বাতিল করা হোক। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর যে কাঁটা তারের বেড়া রয়েছে তা খুলে ফেলে জাতিপুঞ্জের অধীন একটি শান্তিবাহিনী কাশ্মীরে পাঠানো হোক।