
কলকাতা, ৭ নভেম্বর: কলকাতায় (Kolkata) ফের থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গু (Dengur)। ইতিমধ্যেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে শহরের দুই তরুণীর। মৃতদের নাম রুনু বিশ্বাস সরকার (২৮) এবং কেয়া গোস্বামী (২৬)। মৃত রুনু বিশ্বাস কলকাতা পুলিসের মহিলা কনস্টেবল (Women Police Constable Of Kolkata Police) পদে ছিলেন। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় কর্মরত ছিলেন তিনি। মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগুইআটি উদয়নপল্লির বাসিন্দা রুনু ১১ দিন আগেই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। রুনুর মৃত্যুতে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দিকেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন রুনু মণ্ডলের দাদা প্রদীপ ঘোষ। প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, জ্বর নিয়ে রুনু হাসপাতালে (Hospital) ভর্তি হয়। তাঁকে বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখে হাসপাতাল। এমনকী পরিবারকে না জানিয়েই রুনুর ডেলিভারি করানো হয়। সন্তানের জন্মের পরও রুনুর শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে পরিবারকে কিছুই জানাননি চিকিৎসকরা (Doctor)। এর দু'তিনদিন পরই রুনুর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। যারপরেই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ রুনুকে রাখতে রাজি না হওয়ায় বাইপাসের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানে ৩০ বোতল রক্ত (Blood) দেওয়ার পরও শেষ রক্ষা হয়নি। গত মঙ্গলবার গভীর রাতেই মৃত্যু হয় রুনুর।
অন্যদিকে, হাওড়ার (Howrah) সাঁতরাগাছির রামকৃষ্ণ লেন এলাকার বাসিন্দা কেয়া গোস্বামীও জ্বরে (Fever) ভুগছিলেন। ভাইফোঁটার দিন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত সোমবার এলাকার এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি হন। ডেথ সার্টিফিকেটে (Death Certificate) মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয় ডেঙ্গু। এদিকে, তিনদিন আগেই ডেঙ্গুতে আক্তান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে দক্ষিণ হাওড়ার বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকার পি কে রায়চৌধুরি লেনের বাসিন্দা দশ বছরের এক কিশোরীর। উত্তর হাওড়ার বেলগাছিয়া এলাকা এবং মালিপাঁচঘরার ঘুসুড়িতেও দুই শিশুকন্যার মৃত্যু হয় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নৈহাটি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গরিফা কেশব পল্লির বাসিন্দা কৃষ্ণগোপাল অধিকারীর মৃত্যু হয়। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই জেলা স্বাস্থ্য দফতর স্বীকার করেনি ওই সমস্ত ব্যক্তিদের মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গু। হাওড়া পুরসভাও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেনি। সংবাদ প্রতিদিনের খবর অনুযায়ী, জেলার মুখ্য সচিব ভবানী দাস এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, আমরা এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। আরও পড়ুন: Plastic Eggs: কলকাতার হোটেলের খাবারে প্লাস্টিক ডিম? তদন্তে পুলিশ
বর্ষা (Moonsoon) বিদায় নিতেই জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। পুরসভা সূত্রে খবর, কলকাতায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই হাজার ছুঁয়েছে। ডেঙ্গু রোধে পুরসভার তরফে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এলাকা পরিষ্কার রাখা, ব্লিচিং ছড়ানো চলছে সবই। তা সত্ত্বেও রোগের প্রকোপ কমছে না। শীতের (Winter) সূচনা হলেও ডেঙ্গুর প্রকোপ কেন কমছে না, তা নিয়েই চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা।