গুয়াহাটি, ২৭ অগাস্ট: অসমের বিজেপি বিধায়ক দিলীপ কুমার পাল (Dilip Kumar Paul)-এর দাবি, ভগবান শ্রী কৃষ্ণের সুরে বাঁশি বাজালে গরুর দুধ দেওয়ার পরিমাণ অনেক গুণ বেড়ে যায়। শিলচরে এক লোকসংস্কৃতি উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অসমে বিজেপি-র অভিজ্ঞ নেতা-বিধায়ক এই দাবি করেন। এরপর বিজেপি বিধায়কের দাবি, আধুনিক বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন, কৃষ্ণের মত বাঁশি বাজিয়ে গরুর দুধের পরিমাণ বাড়ানো যায়। তিনি আবার অসম বিধানসভার প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার। অসমে বিজেপি-তে তিনি শীর্ষস্থানীয় নেতা। সেই দিলীপ কুমার পালই কৃষ্ণের বাঁশির সঙ্গে গরুর দুধের পরিমাণকে জুড়ে দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন।
রবিবার সন্ধ্যায় শিলচরের জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহে লোকসংস্কৃতি উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে বিজেপি বিধায়কের দাবি, আধুনিক বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন, কৃষ্ণের মত বাঁশি বাজিয়ে গরুর দুধের পরিমাণ বাড়ানো যায়। অসমের শিলচর কেন্দ্রের বিধায়ক দিলীপ পালের দাবি, তিনি বিজ্ঞানের ছাত্র নন ঠিকই। তবে প্রাচীন ভারতের ট্র্যাডিশন-বিশ্বাস নিয়ে তিনি গভীর পড়াশোনা করে দেখেছেন গরুর দুধের সঙ্গে কৃষ্ণের বাঁশির সম্পর্ক হয়েছে। আরও পড়ুন-গুরুড় গঙ্গার এক কাপ জল খেলে গর্ভবতী মহিলার এড়াতে পারেন সিজার, পাথর স্পর্শেই সেরে যায় সর্পদংশন, দাবি বিজেপি সাংসদ অজয় ভাটের
গ্রন্থাগারে দাঁড়িয়ে তিনি বেশ জোর দিয়ে বলেন, ''এটা বলতে পারি, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যে বিশেষ সুরে বাঁশি বাজাতেন, সেই বিশেষ সুরে বাঁশি বাজাতে পারলে এখনও গুরু সাধারণ পরিমাণ থেকে অনেক বেশি দুধ দেয়। সেই বিশেষ সুরে বাঁশি বাজালে গাভীর দুধ বৃদ্ধি পায়। আর সেটাই এখন আধুনিক বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন।'' বিজেপি বিধায়ক অঞ্চলের মানুষদের বোঝানোর চেষ্টা করেন কৃষ্ণের বাঁশির শুনলে গরু দুধ বেশি দেয়।
কৃষ্ণ, রাম, গো মূত্র, পুরান, মহাভারত নিয়ে এমন অদ্ভুত দাবি করে বারবার খবরে উঠে এসেছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিজেপি নেতা-জনপ্রতিনিধিরা। বিজেপি- সাংসদ প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর যেমন বলেছিলেন, গো-মূত্র থেকে তাঁর ক্যান্সার নিরাময় হয়েছে । ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবও এমন দাবি করেছিলেন। ক দিন আগে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সাংসদ অজয় ভাট দাবি করেছিলেন, গুরুড় গঙ্গার এক কাপ জল খেলে গর্ভবতী মহিলার এড়াতে পারেন সিজার, পাথর স্পর্শেই সেরে যায় সর্পদংশন।
কে এই বিধায়ক?
২০১৪ শিলচর বিধানসভা উপনির্বাচনে জিতে এসে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার হন দিলীপ পাল। শিলচরের তৎকালীন বিধায়িকা সুস্মিতা দেব সাংসদ হওয়ায় উপনির্বাচনে জিতে শিলচর থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ মোহন দেবের স্ত্রী এবং সুস্মিতা দেবের মা বিথীকা দেবকে প্রায় ৪০ হাজার ভোটে হারিয়েছিলেন। অসমের বাঙালী অধ্য়ুষিত অঞ্চল বরাক উপত্যকায় ১৫জন বিধায়কের মধ্য়ে তাঁকে বেশি গুরত্ব দেওয়া হয়। অন্তত স্থানীয়দের এমনটাই দাবি। এরপর মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল তাঁর পছন্দের নেতা দিলীপ কুমার পালকে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকারের পদ দেন। অসমে বাঙালি বিধায়ক হিসেবে এটি অবশ্যই একটি বিশেষ প্রাপ্তি ছিল। যদিও NRC-ইস্য়ুতে তিনি গত বছর পদত্যাগ করেন।