কলকাতা: ভারতে প্রতি বছর ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস পালন হয়। এই দিনটি শিক্ষার্থীদের জীবন গঠনে শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি ও দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি তথা প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ডঃ সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণণের জন্মজয়ন্তী ৫ সেপ্টেম্বর। সেদিনই শিক্ষক দিবস পালন করা হয়। ডাঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান ১৮৮৮ সালে ৫ সেপ্টম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
শিক্ষক দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর কিছু শিক্ষককে জাতীয় শিক্ষক সম্মানে ভূষিত করা হয়, শিক্ষাক্ষেত্রে এবং শিক্ষার্থীদের জীবন গড়ার প্রতি তাঁদের বিশেষ অবদানের জন্য। প্রতি বছরের মতো এবারও জাতীয় শিক্ষক দিবসে (Teacher's Day 2023) সরকারি স্কুল ও কলেজের ৭৫ জন শিক্ষককে সম্মানিত করা হচ্ছে।
আমাদের দেশের শিক্ষক দিবসের ইতিহাস সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান (Dr Sarvepalli Radhakrishnan) -এর সঙ্গে সম্পর্কিত। তাঁর যোগ্যতার পরিপ্রেক্ষিতে, ব্রিটিশ সরকার তাঁকে স্যার উপাধি দিয়ে সম্মানিত করেছিল। রাধাকৃষ্ণন ২৭ বার নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। রাধাকৃষ্ণনকে ১৯৫৪ সালে ভারতরত্ন দেওয়া হয়েছিল। সে সময় তিনি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রাধাকৃষ্ণান প্রায় তিন দশক শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। এরপর তিনি ইউনেস্কোতে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৪৯ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তিনি রাশিয়ার মস্কোতে রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ডাঃ রাধাকৃষ্ণান দেশের অন্যতম বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, বিএইচইউ এবং অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মতো মর্যাদাপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। রাধাকৃষ্ণন ভারত ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে সেতু নির্মাণকারী হিসেবেও স্বীকৃত। আরও পড়ুন : Video: বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজির হয়ে একেবারে অন্যরূপে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর
তথ্য অনুযায়ী কয়েকজন ছাত্র, বন্ধুবান্ধব প্রখ্যাত শিক্ষাবিদের জন্মদিন পালন করতে চেয়েছিলেন। সেই সময় রাধাকৃষ্ণণ জানিয়েছিলেন, তাঁর জন্মদিন আলাদাভাবে পালন না করে সেই দিনটি দেশের সব শিক্ষকের জন্য পালন করা হলে তিনি গর্ববোধ করবেন।এরপর ১৯৬২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ডঃ রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিন শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে আসছে।
এই দিনে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।এই দিন দেশের বিভিন্ন স্কুলে সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে, এই দিনটি তাঁদের কাজ থেকে বিরতি দিয়ে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে জুনিয়র ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নেয়।