আজব কাণ্ড! উত্তরাখণ্ডের এই গ্রামগুলিতে তিনমাসে কোনও শিশু কন্যার জন্মই হয়নি
প্রতীকি ছবি( Photo Credit: Pixabay)

উত্তরাখণ্ড, ২২ জুলাই: ‘মাত্রুভূমি: আ নেশন উইদাউট উইমেন’ এই নামটি কি চেনা চেনা ঠেকছে? পরিচালক মণীশ ঝা-র  ( Manish Jha)  চলচ্চিত্রায়ন। ২০০৩ সালে তিনি ভারতবর্ষের মতো উপমহাদেশের নারীর ভবিষ্যতের গতিপ্রকৃতি এঁকেছিলেন, এবার সেই গতিপ্রকৃতিই বাস্তব হয়ে ধরা দিল। ঘটনাস্থল উত্তরাখণ্ড। সেখানাকর উত্তরকাশীর ১৩২টি গ্রামে কোনও সদ্যোজাত বা দু তিনমাসের শিশুকন্যা নেই। টানা তিনমাসে এতগুলি গ্রামে একটিএ শিশুকন্যা জন্মায়নি? স্বাস্থ্যকর্মীদের সহযোগিতায় এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই আলোড়ন শুরু হয়েছে। সরকারি কোনওরকম সচেতনতা প্রচার যে কন্যাভ্রূণ হত্যার মতো অভিশাপকে রুখতে পারেনি, তার নিদর্শন এই ১৩২টি গ্রাম। আরও পড়ুন-ভাবা যায়! চাঁদি ফাটা গরমে গাড়ির মধ্যেই তৈরি হল বিস্কুট

প্রশাসন এখনই এবিষয়ে সরব না হলেও ভিতরে ভিতরে খোঁজখবর শুরু হয়েছে। বিষয়টি সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে উত্তরকাশী  (Uttarkashi)  জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক আশিস চৌহান বলেন, ‘‘যে জায়গাগুলিতে একটিও কন্যাসন্তান জন্ম নেয়নি, বা কন্যাসন্তান জন্মের সংখ্যা এক অঙ্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ, ওই জায়গাগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কী কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হল, তা খতিয়ে দেখছি আমরা।’’ ইতিমধ্যেই অ্যাক্রেডিটেড সোশ্যাল হেল্থ অ্যাক্টিভিস্ট (আশা)-এর সঙ্গে ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠক হয়েছে, তাঁদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এই ঘটনায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন বিশিষ্ট সমাজকর্মী কল্পনা ঠাকুর  (Kalpana Thakur)  । খবরটি জানাজানি হতেই দেশের বিশিষ্টজনদের চোখ কপালে উঠেছে। কন্যাভ্রূণ রক্ষার্থে গোটা দেশেই নানারকম সরকারি প্রকল্প চালু হয়েছে। কেন্দ্রের ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্পটিও এরই অধীনে। কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে এসব প্রকল্পের পিছনে। অথচ লাভের লাভ যে কিছু হচ্ছে না, তা উত্তরকাশীর এই গ্রামগুলির চিত্র দেখলেই বেশ বোঝা যায়।

এমনিতেই কোন গ্রামে কত শিশু জন্ম নিল, তাতে নারী-পুরুষ ব্যবধান কতটা কমল, তার হিসাব থাকে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে। তাদের সেই রিপোর্ট বলছে, গত তিনমাসে উত্তরকাশীর ১৩২টি গ্রামে ২১৬ শিশু জন্ম নিয়েছে। যার মধ্যে, ডুন্ডা ব্লকের ২৭টি গ্রামে ৫১টি, ভাতওয়ারির ২৭টি গ্রামে ৪৯টি, নওগামের ২৮টি গ্রামে ৪৭টি, মোরির ২০টি গ্রামে ২৯টি, চিনিয়ালিসৌড়ের ১৬টি গ্রামে ২৩টি এবং পুরোলা ব্লকের ১৪টি গ্রামে ১৭টি শিশুর জন্ম হয়। কিন্তু তাদের মধ্যে একটিও শিশুকন্যা নেই।