প্রতীকী ছবি(Photo Credit: Wikimedia Commons)

কাঁকড়া বিছে(Scorpion) নামটা শুনলেই কেমন শিরশিরে অনুভূতি খেলে যায় শরীরে। মনে হয় শিরদাঁড়া দিয়ে কী যেন নেমে গেল। কোনও এক অজানা ব্যথা স্নায়ুকে সতর্ক করল। এদিকে আপনি দেখছেন দরগায় উপাসনার সময় আশপাশে কিলবিলিয়ে ঘুরছে কাঁকড়া বিছে। ভয়ে তো প্রার্থনা মাথায় ওঠার জোগাড়, তারমধ্যে নিশ্চিন্তে নামাজ পড়ছেন পাশের জন। হ্যাঁ কাঁকড়া বিছে দেখেও দেখছে না। গল্প নয় এমন আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটেছে এই দেশেই, উত্তরপ্রদেশের আমরোহা(Amroha) দরগায়। এখানেই রয়েছে সইদ শরফুদ্দিন শাহ উইলিয়ায়তের দরগা, যেখানে কাঁকড়া বিছে কাউকে কামড়ায় না। এটাই এখানকার দস্তুর! যুগ যুগ ধরে চলে আসছে।

কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব? কোন জাদুবলে বিছে তার স্বাভাবিক প্রবৃত্তি ভুলে যায়? আবার দরগা ছেড়ে অন্যত্র গিয়েও সে হুল ফোটাতে ভুলে যায় কী করে? এক পক্ষের দাবি, সবটাই দাদা শাহ উইলিয়ায়তের কৃপা। আর দ্বিতীয় পক্ষের নিরিখে, এর পিছনে থাকতে পারে কৌশল। হাসান আসকরি নামে এক স্থানীয় ব্যবসায়ীর যুক্তি, “এই দরগায় কাঁকড়া বিছে না কি কামড়ায় না! হতে পারে এই দরগায়(Dargha) ঘোরাফেরা করা সব কাঁকড়া বিছের বিষ আগে থেকে বের করে নেওয়া হয়। তাই তারা কামড়ায় না।” তবে সত্যিটা যাই হোক না কেন, চূড়ান্ত নাটকীয় ভোট বাজারেও যেভাবে আমরোহার আকর্ষণ ধরে রেখেছে এই জাদুকরী দরগা আর তার অভিনব কাঁকড়া বিছের দল, তাতেই স্পষ্ট–এ ভূভারতে এখনও অনেক কিছুই আপনার চাক্ষুষ করা বাকি!

স্থানীয়দের মতে এই ‘ম্যাজিক’-এর পিছনে রয়েছে দরগার আদি বাসিন্দা, প্রয়াত সুফি সন্ত শাহ উইলিয়ায়ত, যিনি এলাকায় দাদা শাহ উইলিয়ায়ত নামেই পরিচিত। জনশ্রুতি অনুযায়ী, ত্রয়োদশ শতকে এই সুফি সন্ত ইরাক থেকে উত্তরপ্রদেশের আমরোহার এই দরগায় এলেও  প্রবেশাধিকার পাননি। সাপ, বিচে তাঁকে থাকতে দেবে না বলেও নাকি প্রবেশের অধিকার দেওয়া হয়নি।তখন প্রত্যুত্তরে শাহ উইলিয়ায়ত বলেন, ‘‘আমি যেখানে থাকব, সেখানে সাপ-বিছে কখনও আমাকে বা অন্য কাউকে কামড়াবে না।” তার পর থেকেই এখানকার বিছেরা কাউকে কামড়ায় না।