ট্যাংরাকাণ্ডে (Tangra Murder Case) যখন প্রণয় ও প্রসূন দে দফায় দফায় বয়ান বদল করছেন। তখন অন্যদিকে এই ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল নাবালক প্রতীপ দে। সে হাসপাতালে তদন্তকারী আধিকারিকদের জানিয়েছেন বাবা নয়, তাঁর কাকাই সকলকে হত্যা করেছেন। এমনকী নিজের মেয়ে প্রিয়ম্বদাকেও খুন করেছেন প্রসূন। যদিও আত্মহত্যার পরিকল্পনা প্রথম থেকেই ছিল দে ব্রাদার্সের। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে সকলের জ্ঞান ফেরার পরই সুদেষ্ণা ও রোমির হাতের শিরা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করেন প্রসূন। তবে তার আগের রাতেই প্রসূন তাঁর মেয়েকে জোর করে ঘুমের ওষুধ মেশানো পায়েস খাওয়ায়।

তিন সদস্যকে খুন করেন প্রসূনই

নাবালকের বয়ান অনুযায়ী, দে পরিবারের এই পুরো পরিকল্পনার ব্যাপারে আগে থেকেই জানত। তবে শেষমুহূর্তে প্রিয়ম্বদা ভয় পেয়ে পিছিয়ে আসেন। আগের দিন রাতে যখন ঘরে পায়েস বানানো হচ্ছিল, তার আগেই অনলাইন থেকে দশ পাতা ঘুমের ওষুধ অর্ডার দিয়েছিলেন প্রসূন ও প্রণয়। সেটা বাড়িতে আসার পর যখন দুজনে মিলে তিনতলার ঘরে গুড়ো করছিলেন, তখন তা দেখে বাড়ি থেকে পালাতে যায় প্রিয়ম্বদা। তখন তাঁর মাথায় আঘাত করে অচৈতন্য করার পর জোর করে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়।

মা-কাকিমাদের মৃত্যু দেখে ভেঙে পড়ে নাবালক

অন্যদিকে, মঙ্গলবার সকালে যখন ওষুধ মেশানো পায়েস খাওয়ার পরেও প্রতীপের ঘুম ভেঙে যায়, তখন সে হলঘরে এসে দেখে বাবা-কাকা বসে কথা বলছেন। সে তখন জানায় যে মরতে নয়, বাঁচতে চায়। তখন তাঁর বাবার হাতেই কাটার দাগ দেখতে পায়। অন্যদিকে মা, কাকিমা ও খুড়তুতো দিদির ঘরে গিয়ে দেখেন যে সকলের রক্তাক্ত দেহ বিছানায় পড়ে রয়েছে। আর তাতেই ভেঙে পড়েন সে। এরপর বাবা-কাকারা প্রতীপকে অনেক বোঝায়। তারপরেও যখন সে রাজি না হয়, তখন তাঁকে কোনও এক হাসপাতালের সামনে ছেড়ে আসার পরিকল্পনা করেন দুজনে। কিন্তু প্রতীপের বক্তব্য ছিল, বাবা-কাকা কাউকেই মরতে দিতে চায় না।

১২ বছরের নাবালকের বয়ানে জট খুলল খুনের ঘটনায় বড় রহস্য

এমনকী এই নিয়ে গাড়ির মধ্যেই তিনজনের আলোচনা হয়। কখনও পরিকল্পনা করেন রেল লাইনে চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেবেন, কখনও গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়ার কথা ওঠে। তারপর শেষমেশ গাড়ি দুর্ঘটনা করেই মরতে চেয়েছিল দে ভাইরা। বছর বারোর নাবালকের বয়ানের পর পুলিশদের একটা সন্দেহ সত্যি হয় যে হত্যাগুলি প্রসূন নিজের হাতেই করেছে। যদিও এই ঘটনায় সমান দোষী প্রণয়ও। তবে খুনের ঘটনার রহস্য প্রতীপের মাধ্যমেই অনেকটা সমাধান হল বলে মত তদন্তকারীদের।