বর্তমান যুগে মহিলাদের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে উঠেছে স্তন ক্যান্সার। এই ক্যান্সারটি স্তনের টিস্যুতে হয়, এটি শুরু হয় যখন স্তন কোষগুলি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পায় এবং একটি টিউমার তৈরি করে। বয়ঃসন্ধির পর বিশ্বের প্রতিটি দেশেই যেকোনও বয়সে মহিলাদের স্তন ক্যান্সার দেখা দেয়, তবে পরবর্তী জীবনে এর হার বৃদ্ধি পায়। সময়মতো স্তন ক্যান্সার শনাক্ত না করে চিকিৎসা না করা হলে এটি আশেপাশের স্তন টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়ে এবং মারাত্মক রূপ নিতে পারে। স্তন ক্যান্সারের কারণে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। তাই প্রথম পর্যায়ে স্তন ক্যান্সারের লক্ষণগুলি শনাক্ত করা জরুরি, এর ফলে চিকিৎসা সহজ হয়ে যায় এবং আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০২২ সালে ১৮৫টি দেশের মধ্যে ১৫৭টি দেশে মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার হল স্তন ক্যান্সার এবং ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী ৬ লক্ষের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
প্রতি বছর ৪ ফেব্রুয়ারি পালন করা হয় বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। এই দিনটি পালন করার উদ্দেশ্য হল ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, ক্যান্সারের প্রতিরোধের জন্য কাজ করা এবং ক্যান্সারের কারণে মৃত্যু হ্রাস করা। মহিলাদের মধ্যে একটি সাধারণ ক্যান্সার হল স্তন ক্যান্সার। কিন্তু খুব কম মানুষই জানেন যে মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষদের মধ্যেও স্তন ক্যান্সার বিকশিত হয়। এর অনেক কারণ হতে পারে, যেমন - বুকের দুধ না খাওয়ানো, বেশি বয়সে বিবাহ ও গর্ভাবস্থা, স্থূলতা, বেশি ধূমপান ও মদ্যপান করা, পারিবারিক ইতিহাস এবং শারীরিক কার্যকলাপের অভাব। স্তন ক্যান্সারের কারণে হওয়া মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে, এর লক্ষণগুলি সম্পর্কে সকলের জানা গুরুত্বপূর্ণ। তথ্য অনুযায়ী, ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে বেশিরভাগ মানুষ ক্যান্সারের কোনও লক্ষণ অনুভব হয় না। স্তন ক্যান্সারের বিভিন্ন লক্ষণ থাকতে পারে।
স্তন ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ হল স্তনে পিণ্ড বা ঘন হয়ে যাওয়া, প্রায়শই ব্যথা ছাড়াই স্তন বা স্তনবৃন্তের আকারে পরিবর্তন, ত্বকে গর্ত, লালভাব বা অন্যান্য পরিবর্তন, স্তনবৃন্তের চেহারা বা স্তনবৃন্তের চারপাশের ত্বকের পরিবর্তন, স্তনবৃন্ত থেকে অস্বাভাবিক বা রক্তাক্ত তরল বের হওয়া। স্তন ক্যান্সার সহ অনেক গুরুতর রোগ এড়াতে স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। এরজন্য খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে তাজা ফল, শাকসবজি, প্রোটিন এবং শস্য। অতিরিক্ত চিনি, চর্বিযুক্ত খাবার, ফাস্ট ফুড, ভাজা খাবার, প্রক্রিয়াজাত মাংস এবং পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে চলা উচিত। এই সময় নিজেকে শারীরিকভাবে সক্রিয় রাখা জরুরি। এই সময়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে ওজন। স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়াতে ধূমপান এবং অ্যালকোহল পান করার অভ্যাস থেকে দূরে থাকা গুরুত্বপূর্ণ।