কলকাতা : দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত। ভারতে দুবেলা ভাত ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না। দিনে অন্তত একবার, লোকেরা অবশ্যই প্রধান খাবার হিসাবে ভাত (Rice) খেয়ে থাকেন। তবে ভাতে কার্বোহাইড্রেটের (Carbohydrate) পরিমাণ অনেক বেশি এবং অন্যান্য ধরনের পুষ্টির অভাবও রয়েছে। এর পাশাপাশি এতে প্রচুর স্টার্চও পাওয়া যায়। আমরা যদি মিহি চাল বেশি ব্যবহার করি তাহলে রক্তে শর্করার পরিমাণও অনেক বেড়ে যেতে পারে। বেশি পরিমাণ ভাত খেলে অনেক সময় ওজন বৃদ্ধিও হয়। একজন ব্যক্তি যদি এক মাস ভাত না খান, তাহলে তার স্বাস্থ্যে কীরকম প্রভাব পড়বে জেনে নেওয়া যাক।
ক্যালরি কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণ
শ্রীবালাজি অ্যাকশন মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রধান পুষ্টিবিদ প্রিয়া ভ্রমা বলেন, এক মাস ভাত না খেলে শরীরে ক্যালরির পরিমাণ কমে যাবে, এতে প্রধানত ওজন কমতে পারে।
ওখার্ড হাসপাতালের সিনিয়র ডায়েটিশিয়ান রিয়া দেশাই এবিষয়ে একমত। তিনি বলেন, এক মাস ভাত না খেলে ওজন কমতে পারে। তবে আপনি যদি ভাতের মতো অন্য কোনো শস্য খান যাতে কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে তাহলে তাতে আপনার ওজন কমবে না।
ভাত খাওয়া ছেড়ে দেওয়া কী সঠিক সমাধান?
ভাত আমাদের কতটা ভাত খাওয়া উচিত এবং কখন খাওয়া উচিত তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। এক বাটি ভাত ঠিকমতো খেলে শরীরের কোনো ক্ষতি হবে না। অন্যদিকে ভাত না খেলে আমাদের শরীরে আঁশের পরিমাণও কমে যায়। এতে আমাদের হজম প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আসবে। অন্যদিকে, পুষ্টির দিক থেকে যতদূর বলা যায়, ভাতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি। এছাড়া এতে ভিটামিন বি ও মিনারেল রয়েছে। সে কারণেই এর প্রভাব ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয়।
সুষম খাদ্য প্রয়োজন
প্রিয়া ভ্রম বলেন, এক মাসের জন্য ভাত ছেড়ে দেওয়া সমস্যার সমাধান নয়, বরং ভাত কম পরিমাণে খাওয়া বেশি জরুরি। কার্বোহাইড্রেট সীমিত করার জন্য খাদ্য তালিকা থেকে ভাত বাদ দেওয়া একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হতে পারে, তবে এর পরিবর্তে কার্বোহাইড্রেট সঠিকভাবে গ্রহণ করা আরও গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য প্রয়োজন সুষম খাবার খাওয়া। সুষম খাবারে প্রোটিন, ফাইবার এবং সব ধরনের পুষ্টির প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ফাইবারের জন্য প্রতিদিন সালাদ খাওয়া উচিত। অন্যদিকে, প্রোটিনের জন্য প্রতিদিন ডাল প্রয়োজন।
আপনি কার্বোহাইড্রেটের জন্য ভাতও খেতে পারেন তবে সীমিত পরিমাণে। অর্থাৎ সুস্থ থাকতে হলে স্বাস্থ্যকর খাবার প্রয়োজন। স্বাস্থ্যকর ডায়েটে সবুজ শাক, শাক, বাঁধাকপি, লেবু, মসুর ডাল, গোটা শস্য ইত্যাদি খান।তবে ভাজা জিনিস, প্যাকেটজাত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, পিৎজা-বার্গার, ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন।