
মাথাব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা, তবে এর অনেক কারণ থাকতে পারে। কিছু সাধারণ ঘরোয়া প্রতিকার এবং ওষুধের মাধ্যমে এই ব্যথা সহজেই নিরাময় করা সম্ভব, কিন্তু তার আগে মাথাব্যথার কারণ জানা জরুরি। মাথাব্যথার সঙ্গে চোখের ব্যথা, ক্লান্তি, বমি এবং বমি বমি ভাবের মতো সমস্যাগুলি অনুভব হলে স্বাভাবিক মাথাব্যথা সঙ্গে মাইগ্রেনেরও লক্ষণ হতে পারে। মাইগ্রেনের সমস্যা খুব অস্বস্তিতে ফেলতে পারে, এটি একটি সাইকোসোমাটিক ডিসঅর্ডার নামেও পরিচিত। বিভিন্ন ধরনের মাথাব্যথা আছে। সবচেয়ে সাধারণ টেনশনের কারণেও মাথাব্যথা হয়। দীর্ঘস্থায়ী চাপের কারণে প্রায় ১-৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কদের মাথাব্যথা হতে পারে। মাথাব্যথার অনেক কারণ রয়েছে, যার প্রতি সকলেরই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
অ্যালকোহল সেবন, ঘুমের পরিবর্তন বা ঘুমের অভাব, দুর্বল শরীরের ভঙ্গি, ব্যায়ামের মতো শারীরিক কার্যকলাপের অভাব বা সময়মতো খাবার না নেওয়ার কারণেও মাথাব্যথার সমস্যা হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মাইগ্রেন এক ধরনের সাইকোসোমাটিক ডিসঅর্ডার, যার মানে মানসিক স্বাস্থ্যের কিছু সমস্যার কারণে এটি ঘটতে পারে। অতএব যদি ঘন ঘন মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দেয়, তবে এটিকে গুরুত্ব সহকারে মনোযোগ দেওয়া এবং চিকিৎসা করা প্রয়োজন। মাইগ্রেনে ভুগছেন এমন ব্যক্তিরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপ এবং বিষণ্নতায় ভোগেন। কখনও কখনও বিষণ্নতা বা উদ্বেগের কারণেও মাইগ্রেন হতে পারে।
স্বাভাবিক মাথাব্যথার কারণে পুরো মাথায় হালকা বা মাঝারি চাপ অনুভূত হয়, যেখানে মাইগ্রেনের ব্যথা মাথার একপাশে বেশি হয়। কারোর কারোর মাথার দুই পাশে ব্যথাও হতে পারে। সাধারণ মাথাব্যথা কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টা স্থায়ী হয়, যেখানে মাইগ্রেন ৪-৭২ ঘন্টা স্থায়ী হতে পারে। সাধারণ মাথাব্যথার ক্ষেত্রে সাধারণত ব্যথা ছাড়া অন্য কোনও উপসর্গ থাকে না যেখানে মাইগ্রেনের কারণে বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, আলো ও শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা, দৃষ্টি সমস্যা হয়। অতিরিক্ত চাপ, ক্লান্তি, দীর্ঘক্ষণ স্ক্রীন দেখার কারণে মাথাব্যথা হয়, আবার কিছু অবস্থা যেমন স্ট্রেস, হরমোনের পরিবর্তন, আবহাওয়া, খাদ্যাভ্যাস, ঘুমের অভাব, উজ্জ্বল আলো মাইগ্রেনের উদ্রেক করতে পারে।
মাইগ্রেন এবং সাধারণ মাথাব্যথা প্রতিরোধে জীবনযাত্রার উন্নতি করা সম্ভব। ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি ১২ সমৃদ্ধ খাবার যেমন বাদাম, সবুজ শাকসবজি এবং ডিম মাইগ্রেন প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন, অ্যালকোহল এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এগুলো মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে। প্রতিদিন ৭-৯ ঘন্টার ভালো ঘুম জরুরি। ঘুম ও জেগে ওঠার একটি নির্দিষ্ট সময় করতে হবে। যোগব্যায়াম, ধ্যান এবং হালকা ব্যায়াম (যেমন, হাঁটা, সাইকেল চালানো), এছাড়া মানসিক চাপ কমিয়ে মাইগ্রেন হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। মাইগ্রেন ঘন ঘন হলে খুব গুরুতর হতে পারে, তাই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা গুরুত্বপূর্ণ।