সারা বিশ্বে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে সেপসিস রোগটি। তাই এই রোগ সম্বন্ধে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য প্রতি বছর ১৩ সেপ্টেম্বর পালন করা হয় সেপসিস দিবস। এক সময় বিশ্বাস করা হত যে রক্তপ্রবাহে ব্যাকটেরিয়া বা রক্তে অন্যান্য জীবাণুর অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে সেপসিস হয়। কিন্তু নতুন গবেষণায় জানা গিয়েছে যে সেপসিস দুটি কারণে হয়: সংক্রমণ (যেমন নিউমোনিয়া বা মূত্রনালীর সংক্রমণ) এবং শরীরের নিজস্ব ইমিউন সিস্টেম দ্বারা শক্তিশালী এবং ক্ষতিকারক প্রতিক্রিয়া, অর্থাৎ এই রোগে নিজের শরীর শত্রু হয়ে যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শরীরের বিরুদ্ধে কাজ করা শুরু করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সেপসিস একটি গুরুতর এবং মারাত্মক রোগ হতে পারে, কারণ এই রোগ হলে শরীর সংক্রমণ দূর করার প্রক্রিয়ায় নিজের টিস্যু এবং কোষের ক্ষতি করতে শুরু করে। এটিকে বলা হয় স্পুটুমিয়াও, যা সাধারণত রক্তে বিষক্রিয়া নামে পরিচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগ শুরুতেই ধরা পড়লে রোগীকে বাঁচানো যায়। ২০২০ সালে পরিচালিত গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ স্টাডি অনুসারে, বিশ্বব্যাপী ৪৮.৯ মিলিয়ন কেস রিপোর্ট করা হয়েছে এবং এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১ মিলিয়নের, অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর হার প্রায় ২০ শতাংশ।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে এই রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। ডায়াবেটিস, ক্যানসার ইত্যাদিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও এই রোগের ঝুঁকি বেশি। সেপসিসের লক্ষণগুলি হল শরীরে ব্রণ বা ফুসকুড়ি, শ্বাস নিতে সমস্যা, শিশুদের দুর্বল বা উচ্চ-পিচের কান্না, কম শক্তি বা দুর্বলতা অনুভব হওয়া, দ্রুত হার্ট বিট, জ্বর বা হাইপোথার্মিয়া, কাঁপুনি বা শীত অনুভব হওয়া, গরম বা আঠালো ত্বক এবং বিভ্রান্তি বা অস্থিরতা‌। সেপসিস প্রতিরোধ করার জন্য কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য হাত সাবান এবং জল দিয়ে ধুতে হবে, টিকা নিতে হবে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ত্বকের ক্ষত পরিষ্কার করতে হবে, যেকোনো সংক্রমণের চিকিৎসা করাতে হবে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করতে হবে।