ভাপা পিঠে এবং তেলের পিঠে। Photo Source: Instagram

বঙ্গে শীত পড়তেই বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠে-পুলির আয়োজন। হরেক রকম গুড়ের সমাহারে নারকেল দিয়ে হরেক রকমের পিঠের আয়োজন হয়; পাটিসাপটা, গোকুলপিঠে, পোস্ত পিঠে, গড়গড়া আরও কত কী! তবে সময় এগোচ্ছে যত, এই সমস্ত পিঠে তৈরিও আজ ব্যস্ত দুনিয়ায় ক্রমশ অতীত হচ্ছে, মিষ্টির দোকানে কিংবা মেলায় খাবারের স্টলেই এখনও স্বাদ মেলে এই পিঠে-পুলির। তবে সব ব্যস্ততা ভুলে পৌষ মাসের শেষ দিনে মকর সংক্রান্তির দিন আজও বাংলার ঘরে ঘরে তৈরি হয় পিঠে-পুলি; দেশের নানা প্রান্তে দিনটিকে নানাভাবে পালন করা হয়। পৌষ সংক্রান্তি মানে বাঙালির খাওয়ার উৎসব। সেই উৎসবে বাড়িতে বসে একসময় মা কাকীমারা মিলে বানাতে পিঠে-পুলি-পাটিসাপটা। কিন্তু এখন ব্যস্ত সময়ে কারোওর এসব সময়ই নেই। দোকান থেকে কিনে খেতেই পছন্দ করে সবাই বানানোর ঝক্কি না পোয়ানোর জন্য। মকর সংক্রান্তিতে পিঠে-পুলি তৈরির বেশ কিছু সহজ রেসিপি রইল।

মিষ্টি আলুর পান্তুয়া

প্রথমেই রাঙা আলু সিদ্ধ করতে হবে ভাল করে। এরপর খোসা ছাড়িয়ে ভাল করে ধুয়ে মেখে নিতে হবে ভাল করে। অন্যদিকে চিনি ভাল করে জলে ফুটিয়ে নিতে হবে। সিরার মত বানিয়ে নিতে হবে। তবে দেখতে হবে যেন বেশি ঘন না হয়ে যায়। অন্যদিকে আলু ঠান্ডা হয়ে গেলে, ময়দা আর আলু মাখা মিশিয়ে বলের আকারে করতে হবে।  বলের মাঝখানে আঙুল দিয়ে একটু জায়গা করে তাতে খোয়া ক্ষীর এবং এলাচ দিয়ে আবার বলের আকারে করে নিয়ে ভাল করে গোল করে নিতে হবে। বলের মত তৈরি হয়ে গেলে, তা তেলে ভেজে নিতে হবে লাল করে এবং চিনির রসে দিয়ে ৩০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। এরপর পরিবেশন করুন।

সড়াই পিঠে

গরম জল দিয়ে চালের গুড়ো মেখে নিতে হবে ভাল করে। এরপর তার মধ্যে অল্প নুন দিয়ে মাটির সড়াইয়ের মধ্যে থাকা ছোট ছোট খাঁজ কিংবা গর্তে ভরে দিতে হবে চালের গুড়োর মিশ্রণটা। এরপর সামান্য একটু জলের ছিটা দিয়ে পাঁচ মিনিট মত মাটির ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ভাপিয়ে নিলেই তৈরি সড়াই পিঠে। যাকে অনেকসময় ভাপা পিঠেও বলা হয়ে থাকে।  নলেন গুড় দিয়ে কিংলা ঝোলা গুড় দিয়ে খাওয়া যেতে পারে এই পিঠে।

মুগ পুলি

ভাল করে মুগ ডাল ধুয়ে সেটি প্রেসার কুকারে সিদ্ধ করতে বসিয়ে দিন। মুগ ডাল সিদ্ধ হয়ে গেলে তা বেটে নিন ভাল করে। এরপর নারকেল এবং চিনি দু'টি একসঙ্গে ভাল করে জ্বাল দিয়ে নিতে হবে। জ্বাল দেওয়া হয়ে গেলে ময়দা তেল দিয়ে ময়ান বানাতে হবে। ভাল করে ঠেসে ঠেসে মাখতে হবে। অন্যদিকে বানিয়ে নিন চিনির সিরা। ময়দা মাখা হয়ে গেলে তার সঙ্গে জল এবং সিদ্ধ ডাল মাখিয়ে নারকেলের পুর ভরে মুখ বন্ধ করে তেলে ভেজে সিরায় ডুবিয়ে দিলেই তৈরি মুগ পুলি।

ফুলকপির ভাপা পুলি

প্রথমে ফুলকপি কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে। চালের গুড়ো নিয়ে সেটি গরম জল দিয়ে ভাল করে মাখতে হবে। চালের গুড়ো মাখার সময় সামান্য একটু নুন দিয়ে দিতে পারেন। এবার কড়াইয়ে তেল দিয়ে তাতে পেঁয়াজ কুচি বাদামী করে ভেজে নিতে হবে। এরপর আদা, লঙ্কা দিয়ে সামান্য ভেজে জল দিয়ে মাঝারি আঁচে রান্না করতে হবে। জল টেনে এলে ফুলকপি কুচি দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না করে গরমমশলা দিয়ে ভাল করে ভেজে নামিয়ে নিতে হবে। পিঠের মত করে পুর ভরে বানিয়ে পিঠেগুলো ভাপিয়ে নিতে হবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট, তাহলেই তৈরি ভাপা পিঠে থুড়ি ফুলকপির ভাপা পুলি।

তেলের পিঠে

গোবিন্দভোগ চালের গুঁড়োর সঙ্গে খেজুরের ঝোলা গুড় মিশিয়ে ময়দা দিয়ে হ্যান্ডব্লেন্ডারে মিশিয়ে নিন। এরপর এতে নুন, নারকেল কোরা, ঘন দুধ মিশিয়ে ব্যাটার তৈরি করুন; কড়াইয়ে তেল গরম করে মাঝারি আঁচে লাল করে ভেজে নিলেই তৈরি তেলের পিঠে।