বৃহন্নলাদের (Enuch) নিয়ে আমাদের অভিযোগের শেষ নেই। শৈশবে দেখতাম কোনও বাড়িতে নবজাতকের কান্নার আওয়াজ পেলেই বৃহন্নলা সে বাড়িতে হানা দিত। না একা নয়, বেশ দলবেঁধেই চলত এই হানাপর্ব। নাচগান করে মোটা অংকের টাকা কামিয়ে তার আবার ফিরে যেত। এখন তো ট্রেনে বাসে তাদের অত্যাচারে সাধারণ জনগণের অবস্থা বেশ সঙ্গীন। তবুও কেউ শত রাগেও বৃহন্নলা থুড়ি চলতি ভাষায় হিজড়াদের কিছু বলতে চান না। একটাই ভয়, পাপ লেগে যাবে। আরও পড়ুন-সোমবার শঙ্খের পুজো করুন, সংসারের শ্রীবৃদ্ধি হবে
হ্যাঁ, কে কবে কেন কী কারণে এই প্রসঙ্গ তুলেছিলেন তা আজ আর কেউই মনে করতে পারেন না। শুধু এটুকু জানা আছে, হিজড়া যদি কোনও কারণে আপনার ব্যবহারে রেগে যায়, তাহলে অশুভ আর কোনওভাবেই আটকানো যাবে না। তাই ওরা যাই চাক না কেন খুশি মনে তা দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। কিন্তু দিনের পর দিন এদের চাহিদা বেড়েই চলেছে, তাই ইচ্ছে না থাকলেও অনেকে প্রায় বাধ্য হয়েই এদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে ফেলেন। তবুও বড়দের বলতে শোনা যায়, বৃহন্নলাদের খালি হাতে ফেরাতে নেই। খারাপ ব্যবহার তো করতেই নেই। এরা যদি একবার অভিশাপ দিয়ে দেয় তাহলে আমৃত্যু সেই দায়ভার বয়ে নিয়ে বেড়াতে হবে, আর অশুভ ঘটনা যে ঘটবে তা একপ্রকার নিশ্চিত। এবার প্রশ্ন হল এই ক্ষমতা বৃহন্নলাদের হাতে কবে এল?
শোনা যায়, রামচন্দ্র যখন সীতাদেবীকে নিয়ে বনবাসে চলেছেন, তখন অযোধ্যার সাধারণ প্রজারা অনেক দূর পর্যন্ত রাজার সঙ্গে পাড়ি দিয়েছিল। অনেক অনুনয় বিনয় করে রাজাকে ফের সিংহাসনে ফেরাতেই এই উদ্যোগ, তবে রাম সেসবে সাড়া দেননি। একটা সময়পর বিফল মনোরথেই প্রজারা ফিরে গেলেও তাঁদের পিছনে মনুষ্য প্রাণীর উপস্থিতি টের পান রামচন্দ্র। দেখেন হিজড়েদের একটি দল চলেছে পিছু পিছু। রামচন্দ্র বার বার তাদের রাজ্যে ফিরে যেতে বলেন। তবে বিনয়ের সঙ্গে সেই আদেশ এড়িয়ে যায় বৃহন্নলার দল। শেষমেশ, বেশ কিছু বর দিয়ে তাদের গতি রোধ করেন রামচন্দ্র। এরমধ্যে উল্লেখ্য হল, বৃহন্নলাদের কথাতেই গৃহস্থের সুখশান্তি বাঁধা। কোনও বাড়িতে বাচ্চা হলে, ব্যবসায় উন্নতি হলে বৃহন্নলার আশীর্বাদে তা আরও ফুলে ফেঁপে উঠবে।
কথিত আছে, বুধবার যদি কোনও বৃহন্নলাকে টাকা দেন, ভাংতি না থাকায় বড় নোট দেন। তবে খুচ়রো করে ফেরত নেওয়া বাড়তি টাকা নিজের কাছেই রাখুন। কখনও সেই বাকি টাকা খরচ করে ফেলবেন না, পার্সেই রেখে দিন। আপনার উন্নতি হবে। একদিন ফুলে ফেঁপে উঠবে আপনার আর্থিক সম্পদ।