কলকাতা, ২৮ সেপ্টেম্বর: আজ শুভ মহালয়া (Subha Mahalaya)। আকাশে দেখা মিলছে না পেঁজা তুলোর মত মেঘ। মহালয়ার সকালেও আকাশের মুখ গোমড়া। কিন্তু তাল কাটেনি পিতৃতর্পণে (Pitri Tarpan)। আজও বাঙালির বাড়িতে বেজে উঠেছে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের (Birendra Krishna Bhadra) অমোঘকন্ঠের চন্ডীপাঠ। ঘুমে ঢুলু ঢুলু চোখে চ্যানেলযুদ্ধের মহালয়াতে চোখ রেখেছিলেন আপামর বাঙালি। পিতৃপক্ষের অবসান। দেবীপক্ষের শুরু। শুরু হয়ে গেল দেবীবন্দনা।
আজ ভোর থেকেই কলকাতাসহ অন্যান্য গঙ্গা ঘাটগুলিতে (Ganga Ghat) পিতৃপুরুষের স্মৃতিকে উদ্দেশ্য করে চলছে তর্পণ। শুধু পুরুষরাই নন। মহিলারাও তর্পণে অংশগ্রহণ করেছেন। বাগবাজার, শোভাবাজার, আহিরীটোলা সহ অন্যান্য গঙ্গা ঘাটগুলিতে ভিড় উপচে পড়েছে। তর্পণ দেখতে ভিড় জমিয়েছেন বহু মানুষ। রয়েছে পুলিশি নিরাপত্তা। দুর্ঘটনা এড়াতে গঙ্গাবক্ষে সুরক্ষার জন্য রয়েছে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা। হিন্দু ধর্মে মনে করা হয়— পিতৃপুরুষেরা এই সময় পরলোক থেকে ইহলোকে আসেন জল আর পিণ্ডলাভের আশায়। প্রয়াতদের জল ও পিণ্ড দান করে তাঁদের ‘তৃপ্ত’ করাই মহালয়া তিথির রীতি। আরও পড়ুন, এবার লাইভ মহালয়া দেখুন আমাদের ওয়েবসাইটে; কীভাবে দেখবেন এবং শুনবেন AIR সম্প্রচারিত মহিষাসুরমর্দিনী?
এবছর দেবীর ঘোটকে আগমন ও গমন। ত্রেতা যুগে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র অকালে দেবিকে আরাধনা করেছিলেন লঙ্কা জয় করে সীতাকে উদ্ধারের জন্য। আসল দুর্গা পুজো করা হয় বসন্তে , সেটাকে বলা হয় বাসন্তি পুজা। শ্রীরামচন্দ্র অকালে অসময়ে পুজো করেছিলেন বলে এই শরতের পুজাকে দেবীর অকাল-বোধন বলা হয় ।
সনাতন ধর্মে কোন শুভ কাজ করতে গেলে বিবাহ করতে গেলে প্র্রয়াত পূর্ব পুরুষের, যাদের পিতা-মাতা মারা গিয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে সমগ্র জীব-জগতের জন্য তর্পণ করতে হয়, অঞ্জলি প্রদান করতে হয় । তর্পণ মানে খুশি করা । ভগবান শ্রীরাম লঙ্কা বিজয়ের আগেও এইদিনে এমনই করেছিলেন। সেই অনুসারে যারা পিতৃ- মাতৃহীন তাঁরা তাঁদের পিতা, মাতার উদ্দেশ্যে আত্মার শান্তি কামনা করে। সনাতন ধর্ম অনুসারে প্রয়াত আত্মাদের সমাবেশকে মহালয় বলা হয়।এই দিনটিতে তাঁদের স্মরণের মধ্যে দিয়ে আত্মার তৃপ্তি লাভ করানো হয়।