ভারতে অনেক নদী প্রবাহিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে ৭টি অত্যন্ত পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ নদী। এই ৭টি নদীর মধ্যে একটি হল নর্মদা। শাস্ত্রে নর্মদা নদীকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্র অনুসারে, জন্ম হয়েছে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের সপ্তমী তিথিতে অমরকন্টকে (মধ্যপ্রদেশ) জন্ম হয়েছে মা নর্মদার। তাই প্রতি বছর অমরকন্টক জেলায় অত্যন্ত জাঁকজমক ও আনন্দের সঙ্গে পালন করা হয় নর্মদা জয়ন্তী। ২০২৫ সালের মাঘ শুক্লপক্ষ সপ্তমী শুরু হবে ০৪ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার সকাল ০৪:৩৭ মিনিটে এবং শেষ হবে ০৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবার সকাল ০২:৩০ মিনিটে। উদয় তিথি অনুসারে, নর্মদা জয়ন্তী উৎসব পালন করা হবে ০৪ ফেব্রুয়ারি।

পৌরাণিক শাস্ত্র অনুসারে, গঙ্গা নদীর মতোই নর্মদা নদীতে স্নান করলে পাপ মুক্ত হয় জীবন। ভগবান শিব নর্মদা নদীকে আশীর্বাদ করেছিলেন যে, এই নদীতে স্নান করলে দেবতাদেরও সমস্ত পাপ বিনষ্ট হবে। নর্মদা জয়ন্তীতে নর্মদার তীরে পুজো করা হয় মা নর্মদার। এদিন গঙ্গা জল বা নর্মদা নদীতে স্নান করা সম্ভব না হলে গঙ্গা জল বা নর্মদা নদীর জল স্নানের জলে মিশিয়ে বাড়িতে স্নান করা যেতে পারে। স্নান করার পর, পরিষ্কার এবং সাদা পোশাক পরে প্রথমে পুজো ঘর গঙ্গাজল ছিটিয়ে পবিত্র করা হয়। তারপর মা নর্মদার মূর্তি স্থাপন করে মন্ত্র জপ করে শুরু হয় পুজো। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক নর্মদা জয়ন্তীর পৌরাণিক কাহিনী।

স্কন্দ পুরাণ অনুসারে, রাজা হিরণ্য তেজ তাঁর পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে অর্ঘ্য উৎসর্গ করার জন্য পৃথিবীর সমস্ত তীর্থস্থান পরিদর্শন করেছিলেন, কিন্তু পূর্বপুরুষরা পরিত্রাণ পাননি। তাই তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে আপনি কোথায় এবং কীভাবে সন্তুষ্টি পাবেন? পূর্বপুরুষরা বলেছিলেন, মা নর্মদার পবিত্র জলে তর্পণ করলে মোক্ষ লাভ করতে পারেন তাঁরা। পূর্বপুরুষদের পরামর্শ অনুসারে, নর্মদার উৎপত্তিস্থল খুঁজে বের করার জন্য ১৪ বছর ধরে ভগবান শিবের কঠোর তপস্যা করেন রাজা হিরণ্য। কঠোর তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে বর দিয়েছিলেন মহাদেব। বিশ্বাস অনুসারে, এরপর মাঘ শুক্লপক্ষের সপ্তমী তিথিতে পৃথিবীতে অবতরণ করেছিলেন নর্মদা। তারপর নর্মদার তীরে পূর্বপুরুষদের জন্য তর্পণ করে মুক্তি লাভ করিয়ে ছিলেন রাজা হিরণ্য।