গর্ভবতী (প্রতীকী ছবি: IANS)

নতুন দিল্লি, ৮ এপ্রিল: করোনাভাইরাস মহামারীর চেহারা নিয়েছে। ভারতের অবস্থাও ভাল নয়। এই পরিস্থিতিতে ভ্রণের লিঙ্গ নির্ধারণ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা (Sex Test Ban) স্থগিত রাখল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত স্থগিতের সময়সীমা রাখা হয়েছে। এই স্থগিতাদেশের একটা খারাপ দিকও রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসাধু ক্লিনিকগুলিতে গর্ভবতী মহিলাদের ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণ চলবে। এমনকী, ভ্রুণ হত্যাও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ১৯৯৬-তে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত যে আইন হয়েছিল, করোনা বিপর্যয়ের দিনে সেই আইনের কিছু অংশ আপাতত স্থগিত করা হয়েচে। গত ৪ এপ্রিল এই স্থগিতাদেশ দিয়েছে স্বাস্থ মন্ত্রক।

কেননা যে হারে দেসে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে অন্তঃসত্ত্বা মহিলারাও আক্রান্ত হতে পারেন। এক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় ভ্রুণের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করাটা খুব জরুরি। সেকারণে যেসব গর্ভবতী মহিলা ভ্রুণের স্ক্যান করাবেন, সেই সব মহিলার মেডিক্যাল হিস্ট্রি ভালভাবে সংরক্ষণ করবে সংশ্লিষ্ট আল্ট্রা সাউন্ড ক্লিনিকগুলি। এদিকে যেসব চিকিৎসকরা এই ধরনের আল্ট্রাসাউন্ড ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকেন। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে, এই ধরনের তথ্য সংরক্ষণ করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। লকডাউনের সময় অন্যান্য চিকিৎসা পরিষেবার মতোই আল্ট্রা সাউন্ড ক্লিনিকগুলিও খোলা থাকবে। ভ্রুণ সংক্রান্তে ওষুধ বিশেষজ্ঞদের দাবি, লকডাউনের সময় সামাজিক দূরত্ব বাড়াতে বলা হয়েছে। আর ভ্রুণের গতিবিধি পরীক্ষাও চটজলদি করার নির্দেশ রয়েছে। তাই পরীক্ষা জনিত কারণে আল্ট্রা সাউন্ড ক্লিনিকগুলিতে সময় নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এদিকে যাঁরা ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণের বিরুদ্ধে সরব তাঁরা মন্ত্র্কের এহেন সিদ্ধান্তে যারপরনাই বিস্মিত হয়েছেন। আরও পড়ুন-Coronavirus Fear In Kolkata: করোনা আক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতাল ফেরত বৃদ্ধকে মারধর, গাছের সঙ্গে বাঁধা হল

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এই নোটিস দেখে অবাক সিপিএম-এর পলিটব্যুরো নেত্রী বৃন্দা কারাট। তিনি এই ঘটনাকে অস্বাভাবিক ও অভূতপূর্ব হিসেবে দেখছেন। এনিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডক্টর হর্যবর্ধনকে চিঠিও দিয়েছেন শ্রীমতী কারাট। তিনি বলেন, “এই বিধি স্থগিত করার অর্থ আগামী ৩০ জন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট আল্ট্রা সাউন্ড ক্লিনিকগুলি নিজেদের কার্যকারীতা নিয়ে কোনও নথি জমা দেবে না। এই সুযোগে অসাধু ক্লিনিকগুলি অবাধে ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণ প্রক্রিয়া চালাতে পারে। কোভিড-১৯ বিপর্যয়ের সুযোগ নিয়ে এই স্থগিতাদেশের অপব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট আইন ভাঙার সম্ভাবনা প্রবল। এই মর্মে মন্ত্রক কোনও প্রশাসনিক নির্দেশিকা জারি করতে পারে। যেখানে স্পষ্টভাবে বলা থাকবে লকডাউন পিরিয়ডে নিজেদের কাজের রেকর্ড জমা করুক ওই ক্লিনিকগুলি। এরজন্য তাদের সময়সীমাও দেওয়া যেতে পারে।”