কলকাতা, ৮ এপ্রিল: করোনাভাইরাস (Coronavirus) নিয়ে মানুষের মনে কী ধরনের সচেতনতার অভাব রয়েছে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল শহর কলকাতা। লিভারের অসুখে ভোগা বৃদ্ধকে চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। বাড়ি ফেরার পর তিনি পাড়ায় ঘুরতে বেরিয়ে যান। তখনও তাঁর দুহাতে স্যালাইনের চ্যানেল, মাথায় সার্জিক্যাল ক্যাপ ও মুখে মাস্ক। ডানহাতটা সামান্য ফুলে আছে। বছর ৭০-এর বৃদ্ধকে এমন অবস্থায় দেখে এলাকর লোকজনের সন্দেহ হয়। করোনা আক্রান্ত হাসপাতাল থেকে পালিয়ে এসেছে বলে চিৎকার শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ভিড় জমে যায়। কেউ কেউ লাঠি নিয়ে তেড়ে আসে। যাতে বৃদ্ধ কোথাও পালাতে না পারেন।
এরপর মোটা দড়ি দিয়ে গাছের সঙ্গে তাঁকে বাঁধা হয়। বাসিন্দাদের দাবি নাহলে এলাকায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে। ওই বৃদ্ধকে মারধরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার বেশ কিছুক্ষণ পরে এলাকার এক বাসিন্দা আক্রান্তকে চিনতে পারেন। তিনি জানান, মানিকতলার ক্যানাল ইস্টরোডের পাশের পাড়ায় তাঁর বাড়ি, নাম নারায়ণ চৌরাশিয়া। তাঁর প্রতিবেশীরা জানান, একাই থাকেন বৃদ্ধ। বহুদিন হল স্ত্রী ও কন্যারা অন্যত্র থাকেন। লিভারের অসুখে ভুগছেন তিনি। কয়েকদিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রতিবেশীরা তাঁকে আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। এদিন সেখান থেকেই বাড়িতে ফিরেছেন বৃদ্ধ। সঙ্গে স্ত্রীও ছিলেন। তিনি চলে যেতেই পাড়ায় ঘুরতে বেরিয়ে এমন আক্রমণের মুখে পড়লেন। আরও পড়ুন- Air India Thanks IndiGo: করোনা বিপর্যয়ে বিদেশ থেকে ভারতীদের উদ্ধারের ঘটনায় এয়ার ইন্ডিয়াকে স্যালুট ইন্ডিগোর, ধন্যবাদ জানালো জাতীয় বিমান সংস্থা
জানা গিয়েছে, হামলাকারীরে মানিকতলা থানায় খবর দিলে পুলিশ বৃদ্ধকে উদ্ধার করতে চায়নি। বরং লালবাজারে খবর দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স আনানোর ব্যবস্থা হয়। তবে বৃদ্ধের পরিচয় জানা যেতেই পুলিশ সেখান থেকে চলে যায়। পরে মানিকতলা থানার তরফে জানানো হয়, এমন ঘটনার খবর তারা পায়নি। সে যাইহোক না কেন সাধারণ রোগীকেও করোনা আক্রান্ত সন্দেহে এহেন ব্যবহার তো অত্যন্ত অমানুষচিত কাজ। আর যদি করোনা আক্রান্তই হতেন, তাহলেও কী তাঁকে এভাবে মারা যায়? কোভিড-১৯ নিয়ে মানুষের মনে কী ধরনের অসচেতনতা রয়েছে এই ঘটনাই তা প্রমাণ করে।