নতুন দিল্লি, ১০ ডিসেম্বর: সোমবার মধ্যরাতে হাই ভোল্টেজ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল লোকসভায় পাস করয়ে নিল কেন্দ্রের মোদি সরকার। বিলে স্পষ্ট বলা হয়েছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু, খ্রিস্টান, জৈন, শিখ ও বৌদ্ধদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত। মূলত এদের মধ্যে যাঁরা ২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এদেশে চলে এসেছেন তাঁরাই নাগরিকত্ব পাবেন। এরপরই শ্রীলঙ্কা থেকে এদেশে এসে প্রায় ৩৫ বছর ধরে শরণার্থীর মতো বসবাস করছেন ১ লক্ষ তামিল (1 lakh Tamil Sri Lankans)। তাঁদের নাগরিকত্ব বিলের অধীনে নেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করলেন শ্রী শ্রী রবিশংকর (Sri Sri Ravi Shankar)।
উল্লেখ্য, এমনিতেই সংসদে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ দল। তায় এনডিএ জোট শরিকরাও সঙ্গে আছে। এরপরেও বিরোধীরা এই বিল নিয়ে ভোটাভুটিতে যেতে চাইলে শাসকদলের তরফে কোনও আপত্তি তোলা হয়নি। ভোটে দেখা গেল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের তরফে ৩১১টি ভোট পড়েছে। বিরোধিতা করে পড়েছে মাত্র ৮০টি ভোট। তাই বিল পাস হওার পথে কোনও বাধা রইল না। এদিকে বিল পাস হতে না হতেই বিলের কপি ছিঁড়ে লোকসভায় প্রতিবাদ জানালেন মিম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়েসি। বিলের বিরোধিতায় জোড়াল বক্তৃতা রেখেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)ও কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরি (Adhir Chaudhury)। এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল লোকসভায় পাস হওয়ার আগে অন্তত সাত ঘণ্টা বিতর্ক চলে। সেই বিতর্কে হিটলারের সময়কেও মনে করাতে ছাড়েনি। সংসদে অমিত শাহ (Amit Shah) বিলটি পেশ করতে না করতেই বিরোধীরা তাঁকে রীতিমতো ছেঁকে ধরেন। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের প্রস্তাবেও গোটা লোকসভায় এতটা তোলপাড় হয়নি। সোমবার দিনভর একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেল যে এই বিল এনে দেশের হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে এক অদৃশ্য বিভেদের প্রাচীর তৈরি করছে কেন্দ্র। শিবসেনার মুখপত্র সামনা-য় এনিয়ে সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বিল নিয়ে দেশে ধর্মযুদ্ধের আশঙ্কাও স্পষ্ট করা হয়েছে। আসাদউদ্দিন ওয়েসি বলেছেন, হিটলার ও গুরিয়নের সঙ্গে অমিত শাহকে ইতিহাস এই বিলের জন্য মনে রাখবে। আরও পড়ুন-Citizenship Amendment Bill, 2019 Passed: লোকসভায় ৭ ঘণ্টা তর্কবিতর্কের পর মধ্যরাতে পাস নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯
I request the Government of India to consider giving citizenship to more than 1 lakh Tamil Sri Lankans who are living in this country as refugees for the last 35 years.#CABBill
— Sri Sri Ravi Shankar (@SriSri) December 10, 2019
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (Citizenship Amendment Bill, 2019) পাসকে কেন্দ্র করে ১০ ডিসেম্বর ১৬ টি বামপন্থী দল ১২ ঘণ্টার জন্য অসমে বনধ ডাকে। এদের মধ্যে নর্থইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (NESO) ইতিমধ্যে ১১ ঘণ্টার বনধ ডাকে। অল অসম ছাত্র সংগঠনও (AASU) বনধের সমর্থনে বিলটির বিরোধিতায় পথে নামবে। ভোর পাঁচটা থেকে তারা বনধের ডাক দেয়। কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি এই বনধকে সমর্থন জানায়। কেএমএসএসসহ আরও কিছু দল আজ রাজ্যজুড়ে বনধের কর্মসূচি নিয়েছে। এছাড়াও সুতিয়া, মোরান এবং কোচ রাজবংশীর মত আদিবাসী ছাত্র সংগঠনগুলি বনধে অংশগ্রহণ করবে।