নিউ ইয়র্ক. ২৬ সেপ্টেম্বর : আন্তর্জাতিক জঙ্গি হাফিজ় সইদের (Hafiz Saeed) সংসার চলছে না। পরিবারের চার সদস্যের খাবার ও পোশাকের জন্য প্রয়োজন অর্থ। তার পরিবার আর্থিক কষ্টে রয়েছে, এই মর্মে হাফিজ় একটি চিঠি লেখে ইমরান খানের (Imran Khan) সরকারকে। তার ব্যাংক থেকে মাসে মাসে কিছু টাকা পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হোক, হাফিজ় সইদের এই আবেদন গত ১৫ অগাস্ট রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে (United Nations Security Council) পৌঁছে দেয় ইসলামাবাদ। জানা যাচ্ছে, হাফিজে়র আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। কোনও আপত্তি না থাকার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সংবাদসংস্থা ANI জানিয়েছে, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭ কমিটিকে পাঠানো চিঠিতে পাকিস্তান বলেছে, হাফিজ় সইদের চার সদস্যের পরিবার। একমাত্র উপার্জনকারী সে। পরিবারের সদস্যদের যাবতীয় প্রয়োজন তাকেই মেটাতে হয়। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭ কমিটি সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাগুলির তদারকি করে। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭ কমিটির কাছে হাফিজ় সইদ ব্যাংক থেকে যাতে ১,৫০,০০০ রুপি (ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে ৬৭ হাজার টাকা) তুলতে পারে এই আবেদন জানায় পাকিস্তান। মাসে সংসারের ন্যূনতম খরচ চালানোর জন্য এই অর্থ তোলার অনুমতি দেয় রাষ্ট্রসংঘ। ১৫ অগাস্ট এক বিজ্ঞপ্তিতে ১২৬৭ কমিটি বলেছে, "সদস্যদের জানানো যাচ্ছে যে পাকিস্তানের পাঠানো চিঠি নিয়ে কোনও আপত্তি ওঠেনি।। ফলস্বরূপ, চিঠিটি অনুমোদিত হয়েছে।" আরও পড়ুন: Ayodhya Case Deadline: অযোধ্যা মামলার শুনানি শেষ ১৮ অক্টোবর, ফের ডেডলাইন মনে করালেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ
পাকিস্তান তার চিঠিতে বলেছিল যে তারা দেশের নাগরিক হাফিজ় সইদের কাছ থেকে একটি অনুরোধ পেয়েছিল, যিনি ১৯৭৪ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত লাহোরের ইঞ্জিনিয়ারিং এবং টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Engineering and Technology Lahore) অধ্যাপক ছিলেন। ২৫ বছর অধ্যাপনা করার সুবাদে পেনশন পেয়ে থাকে। ৪৫,৭০০ রুপি (পাক মুদ্রায়) পেনশন সে ব্যাংকের মাধ্যমে তোলে। পাকিস্তান আরও জানায় রাষ্ট্রসংঘের প্রস্তাবনা মেনে তারা হাফিজ় সইদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়।
২০০৮ সালের মুম্বই হামলার (2008 Mumbai attacks) পর লস্কর-ই-তইবার প্রতিষ্ঠাতা ও জামাত উদ-দাওয়ার প্রধান হাফিজ় সইদকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে রাষ্ট্রসংঘ। মুম্বই হামলায় ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। রাষ্ট্রসংঘে পাঠানো পাকিস্তানের পাঠানো এই চিঠির পরই নান প্রশ্ন উঠেছ। পাকিস্তান কি আদৌ সন্ত্রাস দমনে অগ্রহী বা সন্ত্রাসবাদের মদত দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী। কারণ একদিকে তারা দাবি করে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তারা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। চলতি বছরের মে মাসে, পাকিস্তানের কাউন্টার টেররিজ়ম ডিপার্টমেন্ট সন্ত্রাসবাদে অর্থ দেওয়ার অভিযোগে হাফিজ় সইদ ও তার দল জামাত-উদ-দাওয়ার শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। পরে হাফিজ় সইদকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে সে লাহোরের কট লাখপত জেলে বন্দি রয়েছে।