বার্লিন, ২ জানুয়ারি: বছরের প্রথম দিনেই (New Year’s Day) আনন্দের জৌলুষ দুঃখতে পর্যবসিত হল। জার্মানির এক চিড়িয়াখানায় (Germany zoo) জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল প্রায় ৩০টি বন্যপ্রাণীর। মৃতদের মধ্যে রয়েছে শিম্পাঞ্জি, ওরাংওটাং ও গরিলারা। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম জার্মানির ক্রেফেল্ড শহরে। বর্ষবরণের রাতে ওই অঞ্চলের কোনও বাসিন্দা উদযাপনকে আলোকময় করতে ফানুস (flying lantern) জ্বেলেছিলেন। সেটিই উড়ে এসে পড়ে ক্রেফেল্ডের ওই চিড়িয়াখানায়। এমনিতে গরিলা, ওরাংওটাং ও শিম্পাঞ্জির জন্য বিখ্যাত এই চিড়িয়াখানা। ক্রিসমাস ও নতুন বছরের ছুটিতে প্রচুর দর্শক সমাগমও হয়েছে। গোটা জানুয়ারি মাস জুড়েই পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকার কথা। তবে এই আগুন সেই আনন্দে জল ঢেলে দিয়েছে সন্দেহ নেই।
জানা গিয়েছে, সেদিন রাতে আগুন গিয়ে পড়েছিল শিম্পাঞ্জিরদের জন্য নির্দিষ্ট খাঁচাটির উপরে। অসহায়ভাবে যন্ত্রণাময় মৃত্যুকে বরণ করা ছাড়া কোনও উপায়ই ছিল না বন্যপ্রাণীদের। মাত্র দুটি শিম্পাঞ্জি কোনওক্রমে ওই ভয়াল আগুনের গ্রাস থেকে রক্ষা পেয়েছে। এরা হল, বালি ও লিম্ব। আগুনের খবর পেয়েই রাতে উদ্ধারকার্য শুরু হয়। তবে ততক্ষণে ৩০টি বন্যপ্রাণীর মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে গিয়েছে। কোনওক্রমে বেঁচে ফেরা বালি ও লিম্বকে উদ্ধার করে গরিলা গার্ডেনে পৃথক খাঁচায় রাখা হয়েছে। আরও পড়ুন-Donald Trump Threatens Iran: বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে হামলার জন্য বড় মূল্য চোকাতে হবে, ইরানকে হুঁশিয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্পের
ক্রেফেল্ড শহরের পুলিশের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বর্ষবরণের রাতে চাইনিজ ফানুস থেকেই এই বিপত্তি ঘটেছে। এই আগুন গিলে ফেলেছে বানরের খাঁচা। একটিও বানর আর বেঁচে নেই। জার্মানিতে চাইনিজ ফানুস ওড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তারপরেও কী করে ফানুস উড়ল তা জানতে শুরু হয়েছে তদন্ত। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত এনিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের না করলেও সুয়োমোটো মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে ক্রেফেল্ডের পুলিশ
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে গড়ে ওঠা ক্রেফেল্ড চিড়িয়াখানায় পাখি, বাদুড়, বানর ও বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। গরিলার খাঁচাটি মূল চিড়িয়াখানার থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত। সেখানে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে বর্ষবরণের রাতে। খবর পেয়েই চিড়িয়াখানায় আসা পর্যটকরা সোশ্যাল মিডিয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। যাঁকা আগে ঘুরে গিয়েছেন তাঁদের পাশাপাশি নতুনরাও সমবেদনা জানিয়েছেন। পশুপ্রেমী সংগঠনের পক্ষ থেকেও এসেছে সাহায্যের আশ্বাস। সবমিলিয়ে এই দুর্দিনেও আবেগাপ্লুত চিড়িয়াখানার কর্মীরা। সকলের এই পাশে থাকার খবরে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেনি চিড়িয়াখানা কতৃপক্ষ।