ওয়াশিংটন, ৩ মার্চ: চিনে (China) করোনাভাইরাস (Coronavirus) আক্রান্তে মৃত্যু ছাড়িয়েছে প্রায় ৩ হাজার। বিশ্বের প্রায় ৫৬টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে মারণ করোনাভাইরাস। করোনায় আক্রান্ত ৮০ হাজার। পরিস্থিতি হাতের বাইরে। রোগের উৎসস্থল হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান (Wuhan) শহরে। সেখানে বেশ কয়েকটি শহর এখনও লকডাউন করে দিয়েছে প্রশাসন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল, কলেজ, অফিস, বাজার ও কারখানা। শিল্পে উৎপাদন, আমদানি, রপ্তানি কমে যাওয়ার ফলে থমকে গিয়েছে চিনের অর্থনীতি। তবে এর ফলে দূষণের পরিমাণ কমেছে।
নাসা (NASA) আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির দাবি, করোনাভাইরাসের জেরে শিল্পোৎপাদন কমে গেছে। বিশেষ করে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ কমেছে বেশ খানিকটা। যার ফলে 'শুদ্ধ' (Pure) হচ্ছে বাতাস (Air)। তাঁরা আরও বলেছেন, বাতাসে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড কমার প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া যায় উহান থেকেই। করোনাভাইরাস সংক্রমণের এপিসেন্টার ধরা হয় চিনের এই প্রদেশকে। পরে চিন জুড়েই নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের (NO2) পরিমাণ কমতে দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার গোডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারে বাতাসের মান নিয়ে গবেষণা করেন ফেই লুই। নাসার বিজ্ঞপ্তিতে তিনি লিখেছেন, ‘একটি নির্দিষ্ট ঘটনার জেরে এতটা জায়গা জুড়ে দূষণ কমতে আগে কখনও দেখা যায়নি।’ তিনি নিজেই ২০০৮ সালের মন্দার সময়ের প্রসঙ্গ টেনেছেন। কিন্তু তখনও এত দ্রুত দূষণ সূচকে এই পরিমাণ পরিবর্তন দেখা যায়নি। আরও একটি বিষয় উল্লেখ করেছেন ফেই। তাঁর পর্যবেক্ষণ, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে চিনের নববর্ষ উৎসবের সময় দূষণ কিছুটা কমে। কিন্তু উৎসব শেষ হতেই আবার বেড়ে যায়। এ বার সেই প্রবণতাও নেই। আরও পড়ুন, করোনা থেকে বাঁচতে এবং বাঁচাতে কী কী সাবধানতা অবলম্বন করবেন, দেখে নিন
Pollution monitoring satellites have detected significant decreases in nitrogen dioxide over China. There is evidence that the change is at least partly related to the economic slowdown following the outbreak of coronavirus. Learn more from @NASAEarth: https://t.co/2N9GB8hfnB
— NASA (@NASA) March 1, 2020
মূলত কারখানা এবং গাড়ি থেকেই নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড বাতাসে দূষণ ছড়ায়। তাই নাসার বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, করোনাভাইরাসের দাপট শুরু হতেই চিনে রাস্তায় বেরোনোর প্রবণতা কমেছে। গৃহবন্দি কিংবা হাসপাতাল বন্দি অবস্থায় রয়েছে। এর ফলে রাস্তায় গাড়ির পরিমাণ অনেক কম। কারখানার উৎপাদনও কমেছে। ব্লুমবার্গ ইকনমিক্সের তথ্য বলছে, বেশিরভাগ কারখানা মোট উৎপাদন ক্ষমতার ৩০-৪০ শতাংশ কম উৎপাদন করছে। অ্যাপেল, জাগুয়ার, ল্যান্ড রোভার, ফক্সভাগেনের মতো সংস্থার মাথায় হাত। তারা জিনিস তৈরি এবং বিক্রির জন্য এরা অনেকটাই চিনের উপরই নির্ভরশীল।