স্বপ্ন ছিল রবীন্দ্রনাখ ঠাকুরের পর সাহিত্যে দ্বিতীয়বার নোবেল পুরস্কার জয় করা। সেই সঙ্গে ঘরের শোকেসে সাজানোর ইচ্ছা ছিল ভারতরত্ন, বঙ্গভূষণ, বঙ্গবিভূষণের মতো পুরস্কারগুলি সাজানোর। সেই কারণে এক ব্যক্তিকে দিনের পর দিন টাকাও দিয়ে গিয়েছেন মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) নিচুতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল শিক্ষিকা জাইনুর বিবি। প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা খরচ করার পর তাঁর ফিরল হুঁশ। বুঝলেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। আর তারপরেই পুলিশের দারস্থ হলেন ওই প্রাক্তন শিক্ষিকা। এদিকে অভিযোগ পেতেই শুরু হয় তদন্ত। অবশেষে বুধবার রাতে অভিযুক্ত হাসানুজ্জামানকে গ্রেফতার করে সুঁতি থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়েছে।
জঙ্গিপুর বইমেলা থেকে পরিচয়
জানা যাচ্ছে ১২ বছর আগে শিক্ষাকতা পেশা থেকে অবসর নিয়েছিলেন জাইনুর। তারপর থেকেই লেখালেখির মধ্যে ছিলেন তিনি। এরমধ্যেই বছর সাতেক আগে জঙ্গিপুর বইমেলাতে হাসানুজ্জামানের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পেশায় তিনিও ছিলেন স্কুল শিক্ষক। সুতির শেখপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। তবে পরিচয় হওয়ার পর থেকেই তিনি নাকি নিজেকে বিশিষ্ট শিল্পীদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত করেন। এবং বেশ কয়েকটি ছবিও দেখান।
ছেলেকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি
আর তারপরেই জাইনুরের সঙ্গে হাসানুজ্জামানের সম্পর্ক তৈরি হয়। অভিযুক্ত প্রতিশ্রুতি দেয় যে সাহিত্যে জাইনুরকে নোবেল পুরস্কার পাইয়ে দেবেন। এছাড়া ভারতরত্ন, বঙ্গভূষণ, বঙ্গবিভূষণের মতো পুরস্কারও তাঁর ঝুলিতে আসবে। এছাড়া জাইনুরের ছেলের ছেলের সরকারী চাকরি পাইয়ে দেওয়ারও ব্যবস্থা করবেন। এসব শুনে দিবাস্বপ্ন দেখা শুরু করেন। এমনকী এই পুরস্কার ও চাকরির জন্য টাকা খরচ করতেও কার্পণ্য করেননি জাইনুর।
টাকা খোঁয়া যাওয়ার পরেই ফেরে হুঁশ
সবমিলিয়ে ৪৪ লক্ষ টাকা খরচ করেন তিনি। তারপরেও নোবেল তো দূরের কথা, রাজ্যের কোনও পুরস্কার পাননি তিনি। এমনকী টাকা পাওয়ার পর হাসানুজ্জামানের হাবভাব বদলাতে থাকে। তারপর সন্দেহ হতেই পুলিশের দারস্থ হন জাইনুর। আর তারপরেই বুধবার রাতে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।