আর্থিক অনটনের দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন নরেন্দ্রপুরের (Narendrapur) লস্করপুরের রায় পরিবার। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে মেয়ে দিশারী কলেজের প্রথম বর্ষ পাশ করেও দ্বিতীয় বর্ষের পড়ার খরচ চালাতে পারেননি বাবা দীপক রায়। আর এই আর্থিক সমস্যার মধ্যেও আবার সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন তাঁরা। পুলিশসূত্রে খবর, দেবব্রত বিশ্বাস নামে এক স্থানীয় যুবক রায় পরিবারের তিন সদস্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়ে বেআইনিভাবে আর্থিক লেনদেন চালাত। আর তার মাঝেই কিছু টাকা খরচ করে দেন দীপক রায়। এরমধ্যেই আবার দিল্লি পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ থেকে তাঁদের কাছে ফোন আসে। আগামী ১২ ডিসেম্বর তাঁদের তলবও করেছিল।
ফলে সবদিক থেকে চাপে পড়ে এবং পাড়ায় সম্মানহানির ভয়ে বুধবার রাতে বেশি পরিমাণের ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন দিশারী রায়, দীপক রায় ও জলি রায়। তবে বৃহস্পতিবার সকালে দেখা যায়, ঘুম ভেঙেছে দিশারীর। তারপরেই বাধ্য হয়ে হাতের শিরা কেটে আবারও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। এরমধ্যেই দিশারীর মাসি বাড়িতে এসে উপস্থিত হন। তাঁকে ঘরে ঢুকিয়ে সবকিছু খুলে বলে অচৈতন্য হয়ে পড়েন দিশারি। পরে তিনজনকেই পুলিশ এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে জলিকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে বেঁচে ছিলেন দীপক ও দিশারি। তাঁদের চিকিৎসাও চলে। কিন্তু শুক্রবার তাঁদেরও মৃত্যু ঘটে।
পুলিশ তদন্তে নেমে সুইসাইট নোট উদ্ধার করে। আর সেখানেই দেবব্রত বিশ্বাসের নাম আসে। তদন্তকারী আধিকারিকরা তাঁর খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারে যে সম্প্রতি তাঁর এক বাইক দুর্ঘটনা হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সে কোমায় রয়েছেন। ফলে সে যতদিন না সুস্থ হচ্ছে বা কোমা থেকে ফিরছে ততদিন এই তদন্তের কিনারা করা খুবই চাপের কাজ। তবে পুলিশের ধারণা, নরেন্দ্রপুুরের এই পরিবারের মৃত্যুর পেছনে ওই যুবকের হাত রয়েইছে।