প্ল্যাটফর্মে নিত্যযাত্রীদের ভিড়(Photo Credits: Social Media)

কলকাতা, ১২ নভেম্বর: পুজোর মধ্যে রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার (Coronavirus Cases In West Bengal) ছিল মারাত্মক। মূলত পুজোর বাজারের সীমাহীন ভিড়ই এর জন্য দায়ী। তবে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের কারণে পুজো মণ্ডপে যখন কনটেইনমেন্ট জোন হয়ে গেল তখন ভিড় করেও মণ্ডপের মধ্যে প্রবেশের অনুমতি মেলেনি। তাই সংক্রমণ বেশ খানিকটা থমকে যায়। এখন দৈনিক সংক্রমণ চার হাজার করে হচ্ছে। তবে সুস্থতার হার বাড়ছে আশাজনক ভাবে। তবে, বুধবার থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। আর প্রথম দিনই তাতে ভিড় চিত্র দেখে অনেকেই দিন কয়েক পরের পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কায় বিশেষজ্ঞরা। পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের ডিআরএম শীলেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ জানান, আগামী দু’-এক দিনের মধ্যে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে।

আগের মতো বাদুড়ঝোলা ভিড় বুধবার চোখে পড়েনি। তবে বহু ক্ষেত্রেই দূরত্ব-বিধি শিকেয় তুলে যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে লোকজনকে। যাত্রীর চাপ বেশি থাকায় হাওড়া ডিভিশনে নির্ধারিত ২০২টি ট্রেনের পরিবর্তে সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৫০টিরও বেশি ট্রেন চালানো হয়েছে বলে রেল সূত্রের খবর। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বুধবার নবান্ন থেকে রেলকে আরও বেশি ট্রেন চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন সকালে শিয়ালদা ডিভিশনের ক্যানিং, ডায়মন্ড হারবার, সোনারপুর শাখায় যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়েছে। করোনা পরিস্থিতির নিরিখে বনগাঁ, গেদে, বারাসত বা হাসনাবাদ শাখায় যথেষ্ট ভিড় ছিল। তবে তা প্রাক-করোনা পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনীয় নয়। তুলনায় ভিড় কম ছিল দক্ষিণ-পূর্ব রেলে। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতে রেল পুলিশ, আরপিএফ, সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিভিন্ন স্টেশনে ভিড় নিয়ন্ত্রণ, থার্মাল স্ক্যানিং বা মাইকে প্রচার করতে দেখা গিয়েছে। আরও পড়ুন-Coronavirus Cases In India: দিল্লিতে ভয়াবহ সংক্রমণের গতি, ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত ৮৬ লাখ ৮৩ হাজার ৯১৭

যাত্রীদের সচেতনতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বহু জায়গায় দূরত্ব-বিধি অগ্রাহ্য করেই যাত্রীরা বসেছেন। শিয়ালদহমুখী বনগাঁ লোকালে কার্যত মারপিট করেও উঠতে পারেননি অনেকে। হাওড়ায় যাত্রীদের হুড়োহুড়ি দেখে আরপিএফ জওয়ানদের বলতে শোনা যায়, প্রথম দিনে এই অবস্থা হলে করোনা ঠেকায় কার সাধ্য? টিকিট বিক্রির হার চোখে পড়ার মতোই বেশি ছিল। এ দিন হাওড়া এবং শিয়ালদহ ডিভিশনে ব্যস্ত সময়ে ৮৪ শতাংশ ট্রেন চালানো হয়। দু’-এক দিনের মধ্যে তা ৯৫ শতাংশ হতে পারে। এ দিন সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রায় ৭ লক্ষ যাত্রী পূর্ব রেলে যাতায়াত করেছেন। দক্ষিণ-পূর্ব রেলে খড়গপুর ডিভিশনে প্রায় ১৭ হাজার ৬০০টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। আচমকা যে সংক্রমণের গতি বাড়তে পারে তেমন আশঙ্কাই হয়তো সত্যি হতে চলেছে।