নিউ ইয়র্ক, ২৫ মে: 'ইউরচেঙ্কো ডবল পাইক'( Yurchenko Double Pike) জিমন্যাস্ট বিশ্বে এ এক এমন মারণ-ভল্ট বা পারফরম্যান্স যা শুধু সেরা পরুষ জিমন্যাস্টরাই করে থাকেন। না, না মেয়েদের জন্য ওসব নয়। কিন্তু সে সব মিথ একেবারে ভেঙেচুরে দিলেন মহিলাদের জিমন্যাস্টে বিষ্ময় মার্কিন তরুণী সিমোনা বাইলস (Simone Biles)। যে বাইলসকে গোটা বিশ্ব প্রথমবার চিনেছিল ২০১৬ রিও অলিম্পিকে জিমন্যাস্ট (ভল্ট ইভেন্ট) সোনা জিতে। যে ইভেন্ট ত্রিপুরার মেয়ে দীপা কর্মকার একটুর জন্য পদক জিততে পারেননি।

সেই বাইলস ইন্দোপলিসের জিকে উকে ক্লাসিক ২০২১ টুর্নামেন্টে গোটা বিশ্বকে চমকে দিলেন। সোনা জেতার পথে বাইলস করে দেখালেন 'ইউরচেঙ্কো ডবল পাইক'-এর মত মারণ-ভল্ট। যা শুধুমাত্র এর আগে মাত্র কয়েকজন পুরুষ জিমন্যাস্টই সফলতার সঙ্গে করতে পেরেছিলেন। প্রথম মহিলা হিসেবে একেবারে কঠিন এই স্ট্যান্স করে ২৪ বছরের সিমোনও বললেন, অনেক প্রস্তুতির ফসল এটা। আমার হাত বাড়ানোর সময় অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের একটা প্রবণতা রয়েছে। এটা আমায় সাহায্য করে। তবে চূড়ান্ত মুহূর্তে অতিরিক্ত কিছু করার চেষ্টা করিনি। চোটের ভয় ছিল। তবে সেসব না ভেবে পুরো জিনিসটা উপভোগ করি। আর বাকিটা তো সবাই দেখতেই পেলেন।"রাশিয়ার বিখ্যাত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জিমন্যাস্ট নাতালিয়া ইউরচেঙ্কো প্রথমবার এই ভল্ট করায়, তার নামেই এই মারণ-ভোল্টের নাম রাখা হয়েছে। চোট সারিয়ে দীর্ঘদিন পর নেমেছিলেন বাইলস। লক্ষ্য অবশ্যই টোকিও অলিম্পিকে ফের সোনার বন্যা বইয়ে দেওয়া।

কী এই ইউরচেঙ্কো ডাবল পাইক

এই মারণ ভল্ট হল প্রথমে দৌড়ে এসে হাতে ভর দিয়ে ডিগবাজি খেয়ে স্প্রিংবোর্ডে পা রেখে ভল্টিং হর্স। সেখানে নিজের মুখ পেছনে রেখে দুহাতে ভর দিয়ে 'ব্ল্যাকফ্লিপ'-এর মাধ্যমে শূন্যে শরীর ছুঁড়ে দেওয়া। এই অবস্থায় দু'বার পুরো শরীরটাকে পুরোপুরি ঘুরিয়ে দেওয়া। শরীর ঘুরতে থাকা অবস্থায় কোমর ভাঙা থাকবে কিন্তু হাঁটু-পা পুরো সোজা রাখতে হবে। পায়ের এই অবস্থানই হল 'পাইক'। একবার নয়, দুবার শূন্যে শরীর মোচড় দেবে এই অবস্থায়। সে কারণেই বলা হয় 'ডাবল পাইক'।

অলিম্পিকে গেমসে চারটি সোনা সহ পাঁচটি পদক, বিশ্ব জিমন্যাস্টের আসরে ১৯টি সোনা সহ ২৫টি পদক। অসংখ্যা রেকর্ড ও আন্তর্জাতিক মেডেল জয়ী বিশ্বের অন্যতম সফল জিমন্যাস্ট বাইলসের আরও এক কীর্তিতে মোহিত বিশ্ব। মাত্র ৪ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার বাইলস সাফল্যের সব আকাশ ছুঁয়ে ফেললেন।