নিউ দিল্লি: হরিয়ানার হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট খেলা ২৫ বছর বয়সী এক যুবককে সোমবার গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি দাবি করেন যে তিনি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং ২০২২ সালের জুলাইয়ে দিল্লির তাজ প্যালেস হোটেলের সঙ্গে ৫ লক্ষ টাকার প্রতারণা করেছেন। বুধবার এমনটাই দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, হরিয়ানার ফরিদাবাদের বাসিন্দা মৃণাক সিং (Mrinank Singh) নামে ওই ব্যক্তি ক্রিকেটার ঋষভ পন্থ (Rishabh Pant) এবং ভারতের বিভিন্ন বিলাসবহুল হোটেলের মালিক ও ম্যানেজারদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। হংকং যাওয়ার সময় আইজিআই বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা সিংকে আটক করেন। তার নামে জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারির পর স্থানীয় আদালত তার বিরুদ্ধে 'লুক আউট সার্কুলার' (এলওসি) জারি করে। Chinese Chess Champion Stripped of Title: হোটেলের বাথটাবে মলত্যাগ, খেতাব গেল চিনা দাবা চ্যাম্পিয়নের
নিরাপত্তা অধিকর্তার গত অগস্টে চাণক্যপুরী থানায় অভিযোগের পরই সিংকে গ্রেফতার করা হয়। জানা গিয়েছে, গত বছর ২২ থেকে ২৯ জুলাই তাজ প্যালেস হোটেলে ছিলেন সিং এবং নিজেকে ক্রিকেটার হিসেবে ৫ লক্ষ ৫৩ হাজার ৩৬২ টাকার বিল পরিশোধ না করেই চলে যান। টাকা চাওয়া হলে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর সংস্থা অ্যাডিডাস সেটা পরিশোধ করবে। এমনকী, দু'লক্ষ টাকার অনলাইন লেনদেনের ভুয়ো ইউটিআর নম্বরও শেয়ার করেন তিনি। নয়াদিল্লির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার রবিকান্ত কুমার বলেন, হোটেল কর্তৃপক্ষ যখন সিস্টেম চেক করেন, তখন তাঁরা দেখেন, তাঁর পক্ষ থেকে কোনও পেমেন্ট করা হয়নি।
পুলিশ জানায়, টাকা পরিশোধের জন্য সিং ও তার ম্যানেজার গগন সিং-এর সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা মিথ্যা বিবৃতি ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভুল তথ্য দেন। তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্তের ঠিকানায় নোটিস পাঠালেও তাঁকে সেখানে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোন বন্ধ করে সোশ্যাল মিডিয়া বা ইন্টারনেট চ্যাটিং অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে যোগাযোগ করছিলেন তিনি। তিনি ভারতে নেই এবং দুবাইয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন বলেও পরিচিতদের বিভ্রান্ত করেছেন বলেও পুলিশ জানতে পারে।
বিমানবন্দরে আটকের সময়, সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের ফোন করে ইমিগ্রেশন অফিসারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন তিনি। মৃণাক বিমানবন্দরে অবৈধভাবে আটকের কারণে কর্নাটকের এডিজিপি অলোক কুমার এবং তার পুত্রের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন বলেও দাবি করেন। জিজ্ঞাসাবাদেও তিনি পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর বাবা অশোক কুমার সিং, যিনি ১৯৮০ থেকে ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে ভারতের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি আরও জানান তাঁর বাবা এয়ার ইন্ডিয়াতে ম্যানেজার হিসাবে কাজ করতেন।
জানা গিয়েছে, নিজেকে এডিজিপি বলে পরিচয় দিয়ে একাধিক বিলাসবহুল রিসর্ট/হোটেল থেকে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা করেছে বলেও স্বীকার করেছে তিনি। কর্ণাটক এবং আইপিএল ক্রিকেটার হিসাবে তার স্টারডম ব্যবহার করে তাদের প্রভাবিত করতেন এবং একাধিক দিন থাকার পরে তাদের পরিশোধের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে তাদের বকেয়া পরিশোধ না করে চলে যেতেন তিনি। এছাড়া ২০২০-২০২১ সালে পন্থকে তিনি ১.৬৩ কোটি টাকা প্রতারণা করেন। তিনি বলেছিলেন যে তার মোবাইল ফোনে তরুণ মহিলা মডেল / মেয়েদের সাথে তার পরিচিতির একাধিক ভিডিও এবং ছবি রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি অত্যন্ত আপত্তিকর।