গোকুল-বৃন্দাবন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কীর্তিকলার সাক্ষী। তাঁর ঐশ্বরিক কর্মকাণ্ড আজও বৃন্দাবনের প্রতিটি রাস্তা এবং কোণে অনুভূত হয়। শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে সম্পর্কিত এই শহরটি অসংখ্য বিস্ময়কর স্থানে পরিপূর্ণ। এখানে এমন কিছু স্থান রয়েছে যা বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র এবং এর অপরিসীম সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক গুরুত্বও রয়েছে। বৃন্দাবনের সরু রাস্তায় অবস্থিত রাধা শ্যাম সুন্দর মন্দির, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্তদের জন্য একটি অনন্য স্থান। এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শ্রী শ্যামানন্দ জি। এখানকার অতিপ্রাকৃত সাজসজ্জা এবং পুজোর রীতিনীতি আরও সুন্দর করে তুলেছে এই মন্দিরটিকে।
বৃন্দাবনের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সেবাকুঞ্জ স্থানটি ভক্তদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। এই স্থানটি ভগবান কৃষ্ণের রাসস্থল নামে পরিচিত এবং রাতে এখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ। মান্যতা রয়েছে যে রাতের বেলায় ভগবান কৃষ্ণ এবং রাধা রানী এই স্থানে লীলা করেন। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে, এই স্থানটি বৈষ্ণব ভক্তদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভোর ৫:৩০ মিনিটে এই স্থানে মঙ্গল আরতি হয়। এছাড়া বৃন্দাবনের মূল অঞ্চলে অবস্থিত বৃন্দাবন চন্দ্রোদয় মন্দির। আগামী সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মন্দিরে পরিণত হতে চলেছে এই মন্দিরটি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ঐশ্বরিক খেলা এবং তাঁর প্রতি ভক্তির প্রতীক হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছে চন্দ্রোদয় মন্দিরটি।
বৃন্দাবনের পুরাতন রাস্তায় অবস্থিত রাধা গোকুলানন্দ মন্দিরটি একটি অনন্য আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য। এই মন্দিরে রয়েছে রাধা গোকুলানন্দ, রাধা বিজয় গোবিন্দ এবং রাধা বিনোদিলাল জির অপূর্ব মূর্তি। এর সঙ্গে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর কাঠের মূর্তি এবং তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপও এখানে রয়েছে। এছাড়াও, অনেক মহান বৈষ্ণব আচার্যের সমাধিও এখানে রয়েছে, যারা রাধা-কৃষ্ণের ভক্তিতে তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। এছাড়া বৃন্দাবন পরিক্রমা রুটে অবস্থিত শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর মিলনস্থল ভক্তদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই স্থানে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বিশ্রাম নিয়েছিলেন এবং তাঁর ভক্তদের সঙ্গে রাধা-কৃষ্ণের স্তোত্র গেয়েছিলেন। এখানে জগন্নাথের অনন্য মূর্তি দেখা যায়, যা বিরল।