‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো’। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর (Subhas Chandra Bose ) উচ্চকণ্ঠের সেই ডাক যেন আজও ভারতবাসীর গায়ে কাঁটার সঞ্চার করে। পরাধীন ভারতকে ব্রিটিশ শাসন মুক্ত করতে জীবন লড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। আর সেই কারণেই সুভাষ চন্দ্র বসু হয়ে উঠেছেন ‘নেতাজি’। তাঁর দেশভক্তি, দেশের জন্যে আত্মত্যাগ, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর অবদানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতি বছর দেশজুড়ে পালিত হয় নেতাজির জন্মজয়ন্তী (Subhas Chandra Bose Jayanti 2023)। ভারতবাসী তাঁকে দেশনায়কের সম্মান দিয়েছেন। নেতাজির জন্মদিনে কোন ছবিগুলি দেখতেই হবে, দেখুন তালিকা
নেতাজির মহান জীবন সংগ্রাম যাতে প্রতিটা ভারতবাসী কখন না ভুলতে পারে সেই কারণে ২০২১ সালে এক অভূতপূর্ব উদ্যোগ নেয় কেন্দ্র সরকার। প্রতি বছর ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষ চন্দ্রের জন্মদিবসটি ‘পরাক্রম দিবস’ হিসাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। চলতি বছরেও ২৩ জানুয়ারি সোমবার নেতাজির ১২৭’তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে পালিত হবে এই ‘পরাক্রম দিবস’ (Parakram Diwas 2023)। স্বাধীন ভারতে ফিরতে পারেননি নেতাজি, ফিরে আসুক তাঁর দেহাবশেষ; জন্মদিনের আগে দাবি জানালেন প্রপৌত্র চন্দ্র শেখর বসু
১৮৯৭ সালের ২৩ জানুয়ারি ওড়িশা কটক শহরে জানকীনাথ বসু এবং প্রভাবতী দেবীর ঘরে জন্ম দেন দেশের বীর পুত্র সুভাষ চন্দ্র বসু। পাঁচ দাদার পথ অনুসরণ করে ১৯১৩ সালে নেতাজি উচ্চশিক্ষার জন্যে ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে। সেই সময়ে উচ্চাবর্নের হিন্দুদের কাছে প্রেসিডেন্সি কলেজের পঠনপাঠন যেন এক পরম্পরা হয়ে উঠেছিল। দর্শন নিয়ে পড়াশুনা শেষ করার পর নেতাজিকে আইসিএস পড়াশুনার জন্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিলেত। ১৯২১ সালে বিলেত থেকে ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরতেই তাঁকে দেওয়া হয়েছিল ব্রিটিশ সরকারের মোটা বেতনের চারকি। কিন্তু সেই চাকরিতে যোগ দেওয়ার বদলে ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতকে স্বাধীন করার লড়াইয়ে নামেন তিনি।
দেশ স্বাধীনের মন্ত্রে লিপ্ত হয়ে ২০ বছর জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। দেশবাসীকে স্বাধীনতার জন্যে উদ্ভূত করতে নিজের একটি সংবাদপত্র বের করেন তিনি। যার নাম দেন ‘স্বরাজ’। এরপর ১৯২১ সালে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের পদে আসীন হন নেতাজি। জহরলাল নেহেরুর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়ে গিয়েছেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। তাঁর জাতীয়তাবাদী মনোভাব, দেশের জন্যে প্রাণ ত্যাগকে স্বীকৃতি দিয়েই কেন্দ্রীয় সরকার ২৩ জানুয়ারি নেতাজির জন্মজয়ন্তী দিনটিকে ‘পরাক্রম দিবস’ হিসাবে মান্যতা দিয়েছে।