শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়া, যার কারণে শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। সম্প্রতি ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধ করেছে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বে এই প্রথম কোনও দেশ এমন পদক্ষেপ নিয়েছে, যা নিয়ে আলোচনা‌ শুরু হয়েছে সারা বিশ্বে। তবে এই আলোচনায় ভালো ও খারাপ দুই ধরনের মতামতই রয়েছে। অনেকেই এই নিষেধাজ্ঞাকে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন, আবার কেউ কেউ এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সমালোচনা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে চলুন জেনে নেওয়া যাক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম শিশুদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং কতটা বিপজ্জনক।

২০২১ সালের এক প্রতিবেদন অনুসারে, যেসব শিশু প্রতিদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৩ ঘন্টার বেশি সময় কাটায় তাদের মধ্যে মানসিক চাপ এবং বিষণ্নতার সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখতে পাওয়া যায়। যুক্তরাজ্যের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইনস্টাগ্রাম এবং স্ন্যাপচ্যাটের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি শরীরের চিত্র সম্পর্কে নিরাপত্তাহীনতা বাড়ায়, বিশেষ করে অল্পবয়সী মেয়েদের মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধ করা শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়ার অভ্যাস একটা নেশার মতো, প্রায়শই সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকে শিশুরা এবং যার ফলে ঘুমের উপর প্রভাব পড়ে।

কিশোর-কিশোরীদের জন্য প্রতিদিন ৮-১০ ঘন্টা ঘুম পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু গভীর রাত পর্যন্ত ফোন ব্যবহারের কারণে অনেক শিশুর ঘুম সম্পূর্ণ হয় না। ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে এমন একটি হরমোন মেলাটোনিন, ফোনের পর্দা থেকে নির্গত নীল আলো মেলাটোনিনের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধ করে শিশুদের স্বাস্থ্যকর রুটিন দেওয়া যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকা জীবনযাত্রাকে ধীর করে দিতে পারে। যে শিশুরা ফোনে বেশি সময় ব্যয় করে তারা নিজেদেরকে ঘরে বন্দী করে রাখে এতে তাদের শারীরিক কার্যকলাপ কমে যায়। WHO এর মতে, ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের প্রতিদিন ১ ঘন্টা শারীরিক কার্যকলাপ করা উচিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম শিশুদের সামাজিক সম্পর্ককেও প্রভাবিত করে।