পর্তুগিজ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে গোয়ার স্বাধীনতার স্মরণে প্রতি বছর ১৯ ডিসেম্বর পালন করা হয় গোয়া মুক্তি দিবস। ৪৫১ বছরের পর্তুগিজ শাসনের সমাপ্তি এবং ভারতে গোয়ার একীভূত হওয়ার স্মরণ করা হয় এই দিনটি। গোয়ার জন্য, এই দিনটি স্বাধীনতা সংগ্রামের উদযাপনের মতো, যা গোয়ার মুক্তির জন্য লড়াই করা অগণিত বিপ্লবীদের আত্মত্যাগকে সম্মান করে পালন করা হয় এই দিনটি। এই বছর গোয়া তার স্বাধীনতার ৬৩ তম বার্ষিকী উদযাপন করতে চলেছে। ১৫১০ সাল থেকে পরবর্তী ৪৫০ বছর ধরে পর্তুগিজদের নিয়ন্ত্রণে ছিল গোয়া। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ভারত, কিন্তু তখনও পর্তুগিজদের নিয়ন্ত্রণে ছিল গোয়া।

পর্তুগিজ প্রশাসকদের একগুঁয়েমির বিরুদ্ধে ভারত সরকারের সমর্থনে গোয়া মুক্তি অভিযান শুরু করে গোয়ার মুক্তিযোদ্ধারা, ধীরে ধীরে গোয়ায় বেড়ে যায় উত্তেজনা ও সংঘর্ষ। অন্যদিকে, ভারত সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, যখন সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, তখন ১৯৬১ সালের ১৮ ডিসেম্বর অপারেশন বিজয় শুরু করে ভারত সরকার। ভারতীয় সেনাবাহিনী ৩৬ ঘন্টার মধ্যে পর্তুগিজদের গোয়া ছাড়তে বাধ্য করে। ১৯৬১ সালের ১৯ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে পর্তুগিজ সেনাবাহিনী। এই জয়ের পর গোয়া, দমন ও দিউ ভারতীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয়। সেই থেকে প্রতি বছর ১৯ ডিসেম্বর পালন করা হয় গোয়া মুক্তি দিবস। এই দিনটি গোয়ার আদিবাসীদের জন্য এবং এই রাজ্যের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।

পর্তুগিজ অত্যাচারে বিপর্যস্ত, গোয়ার মানুষ ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদের সংগঠিত করতে শুরু করে। পর্তুগিজদের তাড়ানোর জন্য গঠিত হয় 'আজাদ গোমন্তক দল', যার বিশিষ্ট নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিশ্বনাথ লভান্ডে, নারায়ণ হরি নায়েক, দত্তাত্রেয় দেশপান্ডে এবং প্রভাকর সিনারি। এই মানুষগুলো পর্তুগিজ পুলিশ এবং ব্যাংকগুলিতে আক্রমণ করেছিল। এরপর তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে অ্যাঙ্গোলা জেলে বন্দী করে পর্তুগিজ পুলিশ। বিশ্বনাথ লভান্ডে এবং প্রভাকর সিনারি জেল থেকে পালাতে সক্ষম হন এবং বিপ্লবী আন্দোলন চালিয়ে যান। ভারত সরকার গোয়াকে মুক্ত করার জন্য অপারেশন বিজয় শুরু করার পর ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তৎকালীন পর্তুগিজ গভর্নর মেনু ভাসালো ডি সিলনা।