২০২৪ সালের ১৪ এপ্রিল চৈত্র নবরাত্রির ষষ্ঠ দিন। চৈত্র নবরাত্রির ষষ্ঠীতে পুজো করা হয় মা দুর্গার কাত্যায়নী রূপের। হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, বৃহস্পতি গ্রহের উপর পূর্ণ শাসন করে মা কাত্যায়নী। নবরাত্রির ষষ্ঠ দিনে ব্রাহ্মমুহূর্তে উঠে স্নান করে পুজোর স্থানটি পরিষ্কার করতে হয়। প্রথমে কলশ পুজো করার পর হাতে ফুল নিয়ে মা দুর্গা ও মা কাত্যায়নীর মন্ত্র জপ করে ধ্যান করতে হয়। এরপর দেবীর চরণে ফুল অর্পণ করে দেবীকে নিবেদন করতে হয় অক্ষত, হলুদ, চন্দন, ফুল, কুমকুম সহ ষোলটি সাজসজ্জা জিনিস। প্রসাদ হিসেবে মা কাত্যায়নীকে নিবেদন করতে হয় মধু ও মিষ্টি। এরপর দুর্গা চালিসা ও দুর্গা সপ্তশতী পাঠ করতে হবে। সবশেষে মা দুর্গার আরতি করে ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করতে হবে।

এক পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, মহর্ষি কাতের পুত্র ছিলেন কাত্য, এই কাত্য গোত্রে জন্ম হয় মহর্ষি কাত্যায়ন। তিনি ভগবতী পরম্বার কঠিন তপস্যা করেছিলেন, তাঁর ইচ্ছা ছিল তাঁর ঘরে কন্যা রূপে জন্মগ্রহণ করেন মা ভগবতী। মা ভগবতী কাত্যায়নের এই প্রার্থনা স্বীকার করে নিয়েছিলেন এবং কিছুকাল পর যখন পৃথিবীতে মহিষাসুরের অত্যাচার বৃদ্ধি পায় তখন ভগবান ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশের গৌরবের একটি অংশে সৃষ্টি হয় এক দৈব মহিলার। যেহেতু মহর্ষি কাত্যায়নের পুজোর কারণে তাঁর জন্ম হয়, তাই এই দৈব মহিলার নাম হয় কাত্যায়নী। এই দেবী মহিষাসুর ও তার অত্যাচারের বিনাশ করেছিলেন।

একজন অদম্য ফলদাতা মা কাত্যায়নী। তিনি ব্রজমণ্ডলের অধিপতি দেবতা হিসেবেও পূজনীয়। ভগবান কৃষ্ণকে স্বামী রূপে পাওয়ার জন্য ব্রজের গোপীরা কালিন্দী-যমুনার তীরে পুজো করতেন মা কাত্যায়নীর। তাই এই দিনে মথুরায় একটি উৎসব পালিত হয়। মা কাত্যায়নীর রূপ অত্যন্ত উজ্জ্বল ও দিব্য। তাঁর চারটি হাতের মধ্যে উপরের ডান হাত থাকে অভয়া মুদ্রায় এবং নীচের হাত থাকে ভর মুদ্রায়। বাম দিকের উপরের হাতে থাকে একটি তরোয়াল এবং নীচের হাতে থাকে একটি পদ্মফুল। মা কাত্যায়নীর বাহন হল সিংহ। মান্যতা রয়েছে, মা কাত্যায়নীর ভক্তি ও আরাধনার মাধ্যমে মানুষ সহজেই লাভ করতে পারে ধন, কর্ম ও মোক্ষ ।