পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বিধানচন্দ্র রায়। প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের পর পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রীর পদে অভিষিক্ত হন বিধানচন্দ্র রায়। ১৮৮২ সালের ১ জুলাই জন্ম হয় বিধানচন্দ্র রায়ের। বিহারের পাটনায় জন্ম হয় বিধানচন্দ্র রায়ের। তাঁর বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মী। অন্যদিকে বিধানচন্দ্র রায়ের মা ছিলেন একজন সমাজকর্মী। রাজা রাজমোহন রায়ের ব্রাক্ষ্ম সমাজের অনুসারী ছিলেন বিধানচন্দ্র রায়ের পরিবার। ফলে ব্রাক্ষ্ম সমাজকে অনুসরণ করেই চলতেন তাঁরা। স্নাতক হওয়ার পর কলকাতা মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা শুরু করেন বিধানসচন্দ্র রায়। কিন্তু তিনি বরাবরই লন্ডন থেকে চিকিৎসার ডিগ্রি অর্জুন করতে চাইতেন। ফলে ইংল্যান্ডের একটি কলেজে তিনি ২৯ বার আবেদন করেন। শেষবার তাঁর আবেদন গৃহীত হয় ইংল্যান্ডের কলেজে। একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক হিসেবে খ্যাতি অর্জনের পর চিকিৎসার উন্নয়নে একাধিক কাজ করেন বিধানচন্দ্র রায়। যাদবপুর টিভি হাসপাতাল, চিত্তরঞ্জন সেবা সদন (মহিলাদের জন্য), কমলা নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতাল, ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন এবং চিত্তরঞ্জন ক্যানসার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গঠনে উদ্যোগী হন।
বিধানচন্দ্র রায় যেমন ছিলেন রাজ্যের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী, তেমনি তিনি একজন সুচিকিৎসকও ছিলেন। যিনি মহাত্মা গান্ধীর চিকিৎসক হিসেবেও স্বনামধন্য ছিলেন। ফলে তাঁর জন্মদিন চিকিৎসক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
বিধানচন্দ্র রায় একজন বিশিষ্ট সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি কংগ্রেস নেতা হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গকে এক সমৃদ্ধশালী রাজ্য় হিসেবে গড়ে তোলেন বিধানচন্দ্র রায়।
প্রসঙ্গত ১৯২৩ সালে দেশবন্ধুর হাত ধরেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় বিধানচন্দ্র রায়ের। মহাত্মা গান্ধির ডাকে সাড়া দিয়ে বিধানচন্দ্র রায় যোগ দেন কংগ্রেসে। ওই সময় তিনি ফিরিয়ে দেন জওহরলাল নেহেরুর উত্তরপ্রদেশে রাজ্যপাল হওয়ার প্রস্তাব। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের প্রতিনিধিত্বে ১৯৪৮ সালের ১৪ই জানুয়ারি থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ১৪ বছর তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। দুর্গাপুর, বিধাননগর, কল্যাণী ও অশোকনগর-কল্যাণগড় নিজের হাতে তৈরি করেন বিধানচন্দ্র রায়।