নতুন দিল্লি, ১৯ জুলাই: সত্যি সত্যিই ফোনে আড়ি পেতেছিল মোদি সরকার৷ পেগাসাস (Pegasus) স্পাইওয়্যার একাজে মোদি সরকারকে সহযোগিতা করেছিল৷ ইতিমধ্যেই সেই তথ্য প্রমাণিত৷ শুধু বিরোধী নেতৃত্ব, সাংবাদিক, বা সমাজকর্মীর ফোনে নয় মন্ত্রীদের ফোনেও আড়ি পেতেছিল মোদি সরকার৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রী থেকে শুরু করে বিরোধী শিবিরের তিন জন গুরুত্বপূর্ণ নেতানেত্রী। এক জন সাংবিধানিক পদে আসীন ব্যক্তি। চল্লিশ জনের বেশি সাংবাদিক। একগুচ্ছ ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি। নিরাপত্তা সংস্থার বর্তমান ও প্রাক্তন প্রধান। এ ছাড়াও সমাজকর্মী, সরকারি আমলা, আইনজীবী৷ এঁদের সবার ফোনেই নজরদারি চালাচ্ছিল মোদি সরকার, সৌজন্যে পেগাসাস স্পাইওয়্যার৷ এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই দেশজুড়ে হইচই শুরু হয়েছে৷ আরও পড়ুন-Kolkata Airport Bomb Scare: কলকাতা বিমানবন্দরে বোমাতঙ্ক, দুবাইগামী বিমানে বোমা রাখার সতর্কতা!
তবে নিজের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে মোদি সরকারের এই নজরদারি কারোরই তেমনভাবে হজম হচ্ছে না৷ এতদিন ধরে ঠিক কোন কোন মন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতৃত্বের ফোনে আড়ি পাতা চলছিল, তা কয়েক দিনের মধ্যেই জানা যাবে৷ অন্যদিকে যেসব সাংবাদিকদের ফোনে নজরদারি চলছিল, তাঁদের নাম প্রকাশ্যে চলে এসেছে৷ তালিকায় রাজধানীতে কর্মরত সংবাদপত্র ও বৈদ্যুতিন মাধ্যমের নামী সাংবাদিকদের নাম যেমন রয়েছেন৷ তেমনই বিভিন্ন রাজ্যে কর্রমরত সাংবাদিকরাও সেই তালিকায় জায়গা পেয়েছেন৷ ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও আগেই জানিয়েছে যে বিভিন্ন দেশের সরকারকেই তারা পেগাসাস স্পাইওয়্যার বিক্রি করেছিল৷ তাহলে এদেশে বিশিষ্ট জনেদের পোনে নজরদারির নির্দেশ কে দিয়েছিল? এক্ষেত্রে উত্তর যে মোদি সরকার তাতে কোনও সন্দেহ নেই৷ এবার প্রশ্ন নিজের মন্ত্রীসভার মন্ত্রীদের উপরে কেন নজরদারি চালালেন?
এমনিতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমোদন ছাড়া কোনও ভাবেই কেন্দ্রীয় সংস্থার উপরে নজরদারি চালানো যায় না৷ তাহলে পেগাসাসকে সাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল? এহেন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আগেই না বা হ্যাঁ কোনওটাই বলেনি৷ বরং ব্যক্তি বিশেষে না হলেও সরকার যে কোনও ফোনে আড়ি পাতা, হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে নজরদারি করতে পারে৷ আইন মেনেই ফোনে আড়ি পাতা হয়। বলাবাহুল্য, প্যারিসের অলাভজনক সংস্থা ফরবিডেন স্টোরিজ ও অ্য়ামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের হাতে তথ্য আসে প্রথম৷ তা হল, ইজরায়েলি সংস্থা যেসব দেশকে পেগাসাস বেচেছিল তাদেরই তথ্য ভাণ্ডার ফাঁস হয়ে যায়৷ ৫০ হাজর নম্বর প্রকাশ্যে চলে আসে৷ এরমধ্যে ৩০০ নম্বর ভারতের৷ কে বা কারা এই কাজের পিছনে রয়েছে তা জানতে বিশ্বের ১৬ সংবাদ মাধ্যমের হাতে এই তথ্য ভাণ্ডার তুলে দেয় ফরবিডেন স্টোরিজ৷ পেগাসাস প্রজেক্টের নামে তদন্ত শুরু হয়৷ তাতে ৩৭টি ফোনে ফরেন্সিক পরীক্ষায় স্পাইওয়্যারের উপস্থিত মেলে৷ যার মধ্যে ১০টি ফোন ভারতের৷
এদিকে আজ থেকেই সংদে বাদল অধিবেশন শুরু হয়েছে৷ এমতাবস্থায় পেগাসাস প্রজেক্ট প্রকাশ্যে আসায় বিজেপির মধ্যেই আলোড়ন পড়েছে৷ কারণ মোদি সরকার কিনা নিজের মন্ত্রীদের ফোনেও নজরদারি চালাতে ছাড়েনি৷