নতুন দিল্লি, ২৯ মার্চ: আগামী ২১ দিনের লকডাউনের (Lockdown) মধ্যে শনিবার দিল্লিতে (Delhi) প্রকাশ পেল এক বিশৃঙ্খলার বিবরণ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একুশ দিনের দেশব্যাপী কর্মসূচির পরে হাজার হাজার অভিবাসী কর্মী চাকরি, আশ্রয় বা অর্থ ব্যতিরেকে চলে গেলেন নিজ নিজ জায়গায়। লকডাউন রাজধানীর আশেপাশে বাস টার্মিনালগুলিতে ভিড় করে উত্তরপ্রদেশের সীমান্ত পেরিয়ে নিজের শহর ও গ্রামে ফিরে যাওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা হাজার হাজার মানুষের।
কেন্দ্রের "সম্পূর্ণ লকডাউন"-কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে হাজার হাজার মানুষ ভোর রাতে দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমানায় আনন্দ বিহার বাস টার্মিনাসে এক জায়গায় জমায়েত হলেন। দ্রুত সংক্রামক করোনাভাইরাসটির মোকাবিলায় বন্ধ করা হয়েছিল আন্তঃদেশীয় বাস এবং রেলপথ পরিষেবা, এবং অভিবাসী এবং তাদের পরিবার কয়েক' শ কিলোমিটার পায়ে হাঁটার বিকল্প বেছে নেয়। এদিকে বাস পৌঁছতেই তার ছাদ থেকে পা-দানি পর্যন্ত ঠাসা ভিড়। ২৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’ধারে লম্বা লাইন। আরও পড়ুন, করোনার জন্য অর্থসংগ্রহ করতে PM-CARES তহবিল গঠন করলেন নরেন্দ্র মোদি
Political slugfest erupts between BJP and AAP over movement of migrant workers from Delhi
Read @ANI Story | https://t.co/fk09TG9mt4 pic.twitter.com/F4l3rRkQLf
— ANI Digital (@ani_digital) March 28, 2020
কেন্দ্রের লকডাউনের নির্দেশের উল্টো পথে হেঁটে শনিবার সকাল থেকে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার ১০০০ টি রাজ্য পরিবহণের বাস রাস্তায় নামিয়েছে। দিল্লির সীমানা থেকে সেই সব বাসে করেই উত্তরপ্রদেশ-বিহারের শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যোগী সরকারের বক্তব্য, এ ছাড়া উপায় নেই। কারণ, বাস না পেয়ে শ্রমিকরা কয়েকশো কিলোমিটার হেঁটেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। রাস্তায় খাবার-জল মিলছে না। ক্লান্ত হয়ে হাইওয়ের পাশেই শুয়ে পড়ছেন তাঁরা। পুলিশ নামিয়ে হাজার হাজার শ্রমিকদের রাস্তা আটকানো সম্ভব নয়। প্রাক্তন মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রণব সেনের আশঙ্কা, এ ভাবে চললে খাদ্যের জন্য দাঙ্গা লেগে যেতে পারে। অতীতে দুর্ভিক্ষের সময় এ দেশে তেমন ঘটেছে।
এই আতঙ্ক এবং অসহায়তার পরিস্থিতি তৈরি হতে দেওয়ার জন্য বিরোধীদের আঙুল মোদী সরকারের দিকে। রাহুল গাঁধীর অভিযোগ, নাগরিকদের এই দুর্দশার মুখে ঠেলে দেওয়া মস্ত অপরাধ। কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেনের দাবি, মোদী সরকার লকডাউন ঘোষণা করেছে, কিন্তু তার জন্য কোনও পরিকল্পনা তৈরি করেনি। কেন্দ্র এবং উত্তরপ্রদেশ সরকারকে তোপ দেগেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও। তাঁর যুক্তি, দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ হয়ে শ্রমিকরা বিহারে ফিরে এলে গোটা রাজ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে। কার মাধ্যমে কোথায় সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তার হদিস মিলবে না। সকাল থেকে দিল্লির আনন্দ বিহারে কোনও শারীরিক পরীক্ষার বন্দোবস্তও ছিল না।