নতুন দিল্লি, ১৮ ডিসেম্বর: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে (Citizenship Amendment Act) চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) ৬০টি মামলা দায়ের হয়েছিল। আজ বুধবার সেই সব মামলার শুনানি, সুপ্রিম রায়ে জানানো হল, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের কোনও স্থগিতাদেশ দেওয়া হবে না। তবে এই আনের বৈধতা নিয়ে পর্যালোচনা করবে দেশের শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্জে এদিন মামলার শুনানি হয়। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামী ২২ জানুয়ারি। মামলার আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। অসমে বিজেপির শরিক দল অসম গণপরিষদও। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও ডিভিশন বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি বিআর গাওয়াই ও বিচারপতি সূর্যকান্ত।
এই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাস হতে না হতেই দেশে হিংসা ছেয়েছে। আইনের শাসন বিপর্যস্ত। সাধারণ মানুষ পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে অকারণে ছাত্র পেটাচ্ছে। দেশ এককথায় অশান্ত। এই আইন প্রত্যাহারের দাবি তুলে ইতিমধ্যেই কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে এক বিশেষ প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেছেন। সেই দলে ছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা একে অ্যান্টনি, গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, তৃণমূল কংগ্রেসের ডেরেক ও’ব্রায়েন, সিপিআই-এর ডি রাজা, সিপিআইএম-এর সীতারাম ইয়েচুরি, আরজেডি-র মনোজ ঝা ও লোকতন্ত্র জনতা দলের শরদ যাদব প্রমুখ। কিন্তু গতকাল সন্ধেবেলা দিল্লির দ্বারকার একটি সমাবেশ থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ স্পষ্ট বলেন, “যাই হয়ে যাক, “মোদি সরকার উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছে। তাতে যাই হয়ে যাক না কেন, এই আইন নিয়ে পিছিয়ে আসবে না সরকার।” আরও পড়ুন-Citizenship Amendment Act: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় উত্তাল দিল্লি, সীলামপুরে ৬ জনকে গ্রেপ্তারের পর জারি ১৪৪ ধারা
Supreme Court issues notice to the Centre on a batch of pleas challenging the Citizenship (Amendment) Act, 2019. pic.twitter.com/c5zkXh30fQ
— ANI (@ANI) December 18, 2019
এদিকে সকালে সংক্ষিপ্ত শুনানিতে ৬০টি পিটিশনের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রের কাছে জবাব তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে আইন কার্যকরে স্থগিতাদেশের আর্জি মানতে রাজি হয়নি। পিটিশনারদের পক্ষের আইনজীবী রাজীব ধাওয়ানের আর্জি ছিল, আইন এখনও বাস্তব রূপ পায়নি। নিয়মকানুনও জারি হয়নি। কাজেই আপাতত এই আইন স্থগিত করা হোক। তবে তাঁর বক্তব্যের বিরোধিতা করে অ্যাটর্নি জেনারেল বেণুগোপাল বলেন, আইনে এ ভাবে স্থগিতাদেশ দেওয়া যায় না। এমন দৃষ্টান্ত সুপ্রিম কোর্টের চার বিচারের ক্ষেত্রে রয়েছে। এদিকে মামলাকারীদের দাবি, সংবিধান অনুযায়ী ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। যে কোনও ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষের সঙ্গে সমান আচরণ করতে বাধ্য এ দেশের সরকার। নতুন আইন সেই সংবিধানকে আঘাত করছে। এই আইন নাগরিকদের জীবন ও মৌলিক অধিকার তথা সাম্যের অধিকারও লঙ্ঘন করে।