প্রচণ্ড রোদের মাঝে হাঁসফাঁস করা দুপুর। শরীর আর মন, দুটোই চায় একটু ঠান্ডা আর স্বস্তির পরশ। ঘরের বড়রা তখন বলেন—“এই সময়ে এক গ্লাস তেঁতুলের শরবতের জুড়ি নেই!” ঠিক তাই, নানা স্বাদের শরবতের ভিড়ে ছাতুর মতোই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে একটুখানি টক-মিষ্টি ঝাঁঝালো স্বাদের তেঁতুলের শরবত।
এই তেঁতুলের শরবত, শুনলেই মনটা ছুটে যায় ছোটবেলার সেই গ্রীষ্মের দুপুরে। স্কুল থেকে ফিরে ঘামে ভেজা জামাকাপড় খুলে, এক গ্লাস ঠান্ডা শরবত হাতে নিয়ে পাখার তলায় বসে পড়া—সে এক অন্যরকম শান্তি।
আজকাল আমরা কত রকমের বোতলজাত পানীয় খাই, কিন্তু এই প্রাকৃতিক শরবতের মতো উপকার পায় কি? তেঁতুল কেবল রান্নার টক বাড়ায় না, শরবতেও এর ব্যবহার অসাধারণ।
তেঁতুল শুধু টকজাত রান্নার উপকরণই নয়, শরবত তৈরিতেও তার জাদু অসাধারণ। প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা এই ফল গ্রীষ্মের দাবদাহে শরীরকে ঠান্ডা রাখে, হজমে সাহায্য করে এবং তৃষ্ণা নিবারণে দারুণ কার্যকর। বিশেষত যারা তেলঝাল খাবার খান বেশি, তাদের জন্য তেঁতুলের শরবত একেবারে দাওয়াই।
তেঁতুলের শরবত তৈরির উপকরণ ও প্রণালী:
১ কাপ বীজ ছাড়া তেঁতুল গরম জলে ভিজিয়ে রেখে নিন ৩০ মিনিট। নরম হয়ে গেলে ভালোভাবে চটকে তার রস ছেঁকে নিন। এতে যোগ করুন ৩-৪ কাপ ঠান্ডা জল, ৩ টেবিল চামচ চিনি (বা মধু), এক চিমটি বিট লবণ ও ভাজা জিরে গুঁড়ো। চাইলে কাঁচা লঙ্কা কুচি বা পুদিনা পাতা ছড়িয়ে দিতে পারেন—স্বাদে আসবে ভিন্নতা।
পুষ্টিগুণ:
তেঁতুলে আছে ভিটামিন C, আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং হজম সহায়ক উপাদান। এটি তাপজনিত দুর্বলতা কমায় ও শরীরে প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে।তেঁতুল শরীর ঠান্ডা রাখে, হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়, হজমে সহায়তা করে, আর গরমে ক্লান্ত শরীরে নতুন উদ্যম আনে।
এই গরমে বাজার থেকে কোমল পানীয় না কিনে ঘরেই বানিয়ে ফেলুন এই সহজ, স্বাদে-গন্ধে অনন্য তেঁতুলের শরবত। শরীরও ভালো থাকবে, স্বাদও মিলবে নতুন এক অভিজ্ঞতার।