আগরতলায় ত্রিপুরায় সিংহাসন ধরে রাখতে পেরেছে বিজেপি। রাজ্যের ৬০ আসনের বিধানসভায় ৩২টি-তে জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে পদ্ম-শিবির। কান ঘেঁষে সরকার গড়ার ম্যাজিক ফিগার পেলেও দারুণ খুশি মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। ভোটের মাত্র ৯ মাস আগে বিপ্লব দেবকে সরিয়ে দল তাঁকে ত্রিপুরার মসনদে বসিয়েছিল। প্রাক্তন কংগ্রেসী মানিক দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব সামলে বিজেপি-কে ক্ষমতায় আনলেন। মানিক জানালেন, খুব সম্ভবত আগামী ৮ মার্চ, বুধবার তিনি শপথ নিতে চলেছেন। সেদিনই আবার হোলি।
ত্রিপুরায় দ্বিতীয়বার বিজেপি সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য আগরতলায় বড় অনুষ্ঠান হতে চলেছে। মানিকের শপথে আসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সংবিধান মেনে রাজভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করলেন মানিক সাহা। আবার তিনি নতুন মন্ত্রিসভা গড়বেন। আরও পড়ুন-ভোটের আগে কুস্তি, পরে দোস্তিতেই বিজেপির সমর্থনে ফের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন কনরাড সাংমা
ত্রিপুরায় সরকারে ফেরার পিছনে মানিক সাহাকে পুরো কৃতিত্ব দিচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যেভাবে বিপ্লব দেবের আমলে দলের অন্তর্কলহ তুঙ্গে উঠেছিল, তাতে ক্ষমতা ধরে রাখা যেত না। মানিকের জন্যই সবটা সামলানো গিয়েছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ত্রিপুরায় আক্রমণাত্মক প্রচার কাজে দিয়েছে বলেও খুশি পদ্ম শিবির। তবে চার-পাঁচটা আসনে একেবারে কম মার্জিনে জেতাটা চিন্তায় রাখছে বিজেপিকে। ত্রিপুরার মত ছোট রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকারে থেকে আরও ভাল ফল করা উচিত ছিল মত বিজেপির একাংশের। সিপিএম, কংগ্রেস জোট আরও আগে হলে বিপদ বাড়ত বলেও ত্রিপুরা বিজেপি-র একাংশের মত। তবে শেষ অবধি অল ইজ ওয়েল হল বলে হাসি মুখে পদ্মশিবির। আর একটুর জন্য বিজেপিকে হারানো গেল না আফশোস করছেন সিপিএম, কংগ্রেস নেতারা।
অন্তত ৬টি আসনে কংগ্রেসের ভোট সিপিএমে, কিংবা সিপিএমের ভোট পুরোপুরি কংগ্রেসে না আসায় বিজেপি ফায়দা তুলেছে বলে ভোট বিশেষজ্ঞদের মত। বিজেপি ও তার জোটসঙ্গী আইপিএফটি ৩৩টি আসনে জেতে। সেখানে বাম, কংগ্রেস ও তিপরা মোথায় মিলিয়ে জয় পায় ২৭টি আসনে। ৬টি আসনের ফলই মুল ফারাক গড়ে দিল। যেখানে বিজেপি পাঁচটি আসনে জিতেছে এক হাজারের কম ভোটে।
ত্রিপুরা বিধানসভা ২০২৩-র ফল
মোট আসন: ৬০
বিজেপি জয়ী: ৩২টি (৩৯%)
তিপরা মোথা জয়ী: ১৩টি (২২.১২%)
সিপিএম জয়ী: ১১টি (২৪.৬২%)
কংগ্রেস জয়ী: ৩টি (৮.৫৬%)
আইপিএফটি জয়ী: ১টি (১.২৬%)
(বাম দলগুলি মিলিয়ে পায় প্রায় ২৬ শতাংশ ভোট। নির্দল সহ ছোটদলগুলি পায় ২২.১২ শতাংশ ভোট)