মথুরা, ১৭ ফেব্রুয়ারি: স্বাধীনতার পর এই প্রথম! কোনও মহিলা আসামীর ফাঁসি হতে চলেছে। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের মথুরার। ২০০৮ সালের একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শাবনামকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। নিজের পরিবারের ৭ সদস্যকে খুন করার অপরাধে শাবনামকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছে আদালত। তবে শাবনাম একা নয়, একই ঘটনার অপরাধে তার প্রেমিক সেলিমকেও মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছে আদালত। মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা হলেও চূড়ান্ত তারিখ এখনও পর্যন্ত ঘোষণা করেনি আদালত।
শাবনাম কে? আমরোহাতে পরিবারের সঙ্গে থাকত শাবনাম। ১৯ এপ্রিল, ২০০৮; ঘটনার ঠিক ৫ দিন পর গ্রেফতার করা হয় তাকে। সেসময় ৭ মাসের গর্ভবতী ছিল শাবনাম। ২০০৮ সালে সন্তানে জন্ম দেয় শাবনাম। পড়াশুনাতেও বেশ মেধাবী ছিল শাবনাম। ইংরেজি এবং ভূগোল, দু'টো বিষয়েই মাস্টার ডিগ্রি রয়েছে শাবনামের। গ্রামের একটি প্রাইমারি স্কুলে পড়াতো শাবনাম। অন্যদিকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়ই পড়াশুনার পাঠ চুকেছিল সেলিমের। শাবনামের বাড়ির সামনে একটি কাঠের দোকানে কাজ করত সেলিম।
১৪ এপ্রিল, ২০০৮-এ কী হয়েছিল?
রাত দু'টোর আশেপাশে আচমকাই চিৎকার করে শাবনামের কাঁদার আওয়াজ পান প্রতিবেশীরা। তারা সকলে ভেবেছিলেন বাড়িতে ডাকাত পড়েছে হয়তো। প্রতিবেশীদের অনেকেই শাবনামের বাড়ির পাঁচিল টপকে শাবনামকে উদ্ধার করতে আসেন। কিন্তু ভিতরে আসতেই পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশে খবর দেন প্রতিবেশীরাই। ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় পুলিশ। শাবনামের বাবা শৌকত আলি (৫৫), মা হাশমি (৫০), বড় ভাই অনীস (৩৫), স্ত্রী অঞ্জুম (২৫), ছোট ভাই রশিদ (২২), আত্মীয় রাবিয়া (১৪) এবং ১০ মাসের আর্শকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশকে প্রাথমিকভাবে শাবনাম জানিয়েছিল, ছাদের ঘরে শুয়েছিল সে। কিন্তু রাত যত বাড়তে থাকে, তত গরম লাগতে থাকায় সে নীচে নেমে আসতেই এই দৃশ্য দেখে সে। যদিও পরে পুলিশ তদন্ত করে দেখে শাবনাম এবং তার প্রেমিক সেলিম যৌথভাবে খুন করেছে শাবনামের পরিবারের সকলে। শাবনামের পরিবার থেকে মেনে নেয়নি সেলিমের সঙ্গে সম্পর্কটা। যার জেরেই এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় বলে তারা জানিয়েছিল পুলিশকে। ঘটনাস্থল থেকে সেলিমের রক্তমাখা শার্ট উদ্ধার হয় বলেও জানিয়েছিল পুলিশ।
নিম্ন আদালতে শাবনাম সেলিমের সাজা ঘোষণার পর তারা ফের সুপ্রিম কোর্টে বিচার পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানান। কিন্ত নিম্ন আদালতের রায়ই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট।