তিরুবনন্তপুরম, ১৬ নভেম্বর: মহিলা পুণ্যার্থীদের (Women Devotees) নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে না বলে আগেই দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই পরিস্থিতিতেই শনিবার থেকে ৪১ দিনের জন্য খুলেছে কেরলের শবরীমালা মন্দির (Sabarimala Temple)। বিকাল ৫টায় পুণ্যার্থীদের জন্য মন্দিরের দরজা খোলে। জানা যাচ্ছে, মন্দির খোলার আগেই কেরালা পুলিশ (Kerala)১০ মহিলা ভক্তকে ফিরিয়ে দিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মহিলারা সবাই রজঃস্বলা (Menstruating Age) ছিলেন, অর্থাৎ সবার বয়স ৫০ বছরের মধ্যে। এই মহিলাদের পাম্বার বেস ক্যাম্প থেকে ফিরে আসতে বলা হয়েছিল। কারণ, সরকার মহিলা ভক্তদের নিরাপত্তা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই ১০ মহিলা অন্ধ্রপ্রদেশে থেকে এসেছিলেন বলে জানা গেছে।
গত বছরই শবরীমালায় সব বয়সি মেয়েদের পুজোর অধিকারকে স্বীকৃতি দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তার পর হাজার হাজার মানুষের বাধা অতিক্রম করে ওই মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করেন কয়েক জন মহিলা। সেইসময় তাঁদের নিরাপত্তা দিতে হিমশিম খেতে হয়েছিল পুলিশকে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত হন বহু মানুষ। সেই ঘটনার পরই আদালতে মামলা পুনর্বিবেচনা করে দেখতে একাধিক আর্জি জমা পড়েছিল, দিন কয়েক আগেই যা সাত বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত আসার আগেই মন্দির খুলে যাওয়ায় মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে অস্বীকার করে কেরল সরকার। কেরালার বাম সরকার গত বছর সুপ্রিম কোর্টের শবরীমালায় মহিলাদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ কার্যকর করেছিল। যদিও এই বছর সেই অবস্থান থেকে তারা সরে এসেছে। আরও পড়ুন: One Nation-One Pay Day: সারা দেশে সব শ্রমিকের একই দিনে মাইনে হবে, বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে মোদি সরকার
কেরালার দেবস্বম মন্ত্রী কাদাকম্পলি সুরেন্দ্রন (Kerala Devaswom Minister Kadakampally Surendran) এক সরকারি বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে, যে সব মহিলা সুরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করতে চান তাঁদের আদালতের নির্দেশ নিয়ে আসতে হবে, না হলে সরকারের পক্ষ থেকে আলাদা করে কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়া হবে না তাঁদের। তিনি বলেন, "এটা মন্দির প্রতিবাদ-আন্দোলন করার জায়গা নয়। ত্রুপ্তি দেশাইয়ের মতো কর্মীদের জন্যেও এটা শক্তি প্রদর্শন করার জায়গা নয়। আমরা তাঁদের দায়িত্বও নেব না। তাঁদের এখানে আসতে হলে আদালতের নির্দেশ নিয়ে আসতে হবে।" কেরালার ওই মন্ত্রী পবিত্র আরাধনার সময় সংবাদমাধ্যমের কর্মীদেরও সংযম ধরে রাখতে বলেছেন। তিনি বলেন, "নেতা-কর্মীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া এবং উন্মত্ততা দেখানো, এগুলো নিশ্চয়ই সংবাদমাধ্যমের কাজ নয়। কিছুটা রাজনৈতিক আলোড়ন তৈরির জন্যে কয়েকটি দল অবশ্যই চেষ্টা করবে, তবে সংবাদমাধ্যমের এতে অংশ নেওয়া উচিত নয়।" অন্যদিকে কেরালা সরকারের সুরেই সুর মিলিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের আদেশের পরে তাঁরা এ বিষয়ে আইনি পরামর্শও চেয়েছে।
শবরীমালা মন্দির খোলা উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হয়েছে যে মন্দিরে শৌচাগার, পানীয় জল এবং চিকিৎসাজনিত জরুরি সমস্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সমস্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রয়েছে। ৮০০ এরও বেশি চিকিৎসা সহায়তাকারী, ১৬টি জরুরি চিকিৎসা কেন্দ্র, প্রায় ২,৪০০টি শৌচাগার এবং ২৫০-রও বেশি জলের কিয়স্ক রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে এক হাজারেরও বেশি সাফাইকর্মী মোতায়েন রয়েছে মন্দির চত্বরে।