নয়া দিল্লি, ২৩ জুলাই: নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) কাশ্মীর ইস্য়ুতে দু সপ্তাহ আগেই তাঁর কাছে মধ্যস্থতা করার আবেদন জানিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন মন্তব্যে দেশের রাজনীতিতে ঝড়। দেশের বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ট্রাম্পের এমন দাবি ভিত্তিহীন। তবে এরপরেও থামছে না ঝড়। রাজ্যসভায় বিরোধীরা এই ইস্য়ুতে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাখার দাবিতে সরব হলেন। কংগ্রেস এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্য জানতে গিয়েছে।
আজ, সকালে কংগ্রেস নেতা তথা সাংসদ শশী থারুর কাশ্মীরে মধ্যস্থতা ইস্য়ুতে ট্রাম্পের দাবি উড়িয়ে নরেন্দ্র মোদির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কেরল থেকে জিতে আসা কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এমন কথা বলতে পারেন না। তার আগে ট্রাম্পের দেশের এক জনপ্রতিনিধি পুরো ঘটনার পিছনে নরেন্দ্র মোদির পক্ষে মুখ খুলে, তাঁর দেশের প্রেসিডেন্টের হয়ে ক্ষমা চেয়ে নেন। আরও পড়ুন-ট্রাম্পের দাবি
ডেমোক্রেট জনপ্রতিনিধি ব্রেড শেরম্যান বলছেন, ''কাশ্মীরে মধ্যস্থতা নিয়ে ট্রাম্প যে দাবি করেছেন, আমি প্রেসিডেন্টের হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কাশ্মীর নিয়ে ভারতের অবস্থানকেও সমর্থন জানাচ্ছি।''
তবে এরপর বেলা বাড়তেই কাশ্মীর মধ্যস্থতা ইস্য়ুতে সুর চড়ায়। কংগ্রেসের সদ্য পদত্যাগ করা সভাপতি রাহুল গান্ধী, এই ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে টুইট করেন। রাহুল বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দাবি যদি সত্যি হয়, যদি সত্যি প্রধানমন্ত্রী কাশ্মীর ইস্য়ুতে ওনার মধ্যস্থতা চেয়ে থাকেন, তাহলে সেটা দেশের স্বার্থের ওপর বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে, এবং ১৯৭২ শিমলা চুক্তির উলঙ্ঘন করা।''
President Trump says PM Modi asked him to mediate between India & Pakistan on Kashmir!
If true, PM Modi has betrayed India’s interests & 1972 Shimla Agreement.
A weak Foreign Ministry denial won’t do. PM must tell the nation what transpired in the meeting between him & @POTUS
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) July 23, 2019
পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে গেলে আগে সীমান্ত-সন্ত্রাস, জঙ্গিদের মদত দেওয়া বন্ধ হওয়া দরকার। ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তিতে কাশ্মীরকে দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলেই মেনে নিয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান। সেই চুক্তি এবং লাহোর ঘোষণাপত্রই আলোচনার ভিত্তি হওয়া উচিত বলে মনে করে ভারত। তাই এই ইস্যুতে কোনও দেশেরই মধ্যস্থতা করার জায়গা নেই বলে নয়া দিল্লির বক্তব্য। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, ''আমরা মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য শুনেছি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এমন কোনও অনুরোধ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে করেননি। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সব বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক স্তরেই আলোচনা হবে, এটাই আমরা ধারাবাহিক ভাবে বলে এসেছি। ''
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের মাঝে ট্রাম্পের দাবি, 'দু'সপ্তাহ আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে আমার সাক্ষাতে কথা হয়েছিল। মোদি জানতে চান, আমি মধ্যস্থতা করতে রাজি কি না। আমি প্রশ্ন করি, কোন বিষয়ে। তিনি বলেন, কাশ্মীর। কারণ, কাশ্মীর নিয়ে বিবাদটা অনেক দিন ধরে চলছে। আমি ওঁকে জানাই, মধ্যস্থতা করতে পারলে আমি খুশিই হব।''
যা শুনে বেজায় খুশি ইমরান খান বলেছেন, ''এমনটা হলে ১০০ কোটি মানুষের শুভেচ্ছা আপনার সঙ্গে থাকবে।''ট্রাম্পের এমন দাবি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়।