দিল্লি, ৩১ আগস্ট: ভারতীয় অর্থনীতির মন্দার বাজারে যখন বেশ বেকায়দায় দ্বিতীয় মোদি সরকার তখনও আরও ভয়বাহ খবর। পদত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি নৃপেন্দ্র মিশ্র (Nripendra Misra)। প্রথম সরকারের আমলেই প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হিসেবে নৃপেন্দ্র মিশ্রের নাম ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজেই। তবে নৃপেন্দ্র মিশ্রের নাম প্রস্তাব করেছিলেন বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তখনও নরেন্দ্র মোদি তাঁকে ভাল চিনতেন না। তবু তাঁকে পদে বসান। তার জন্য নিয়মেরও বদল করেন। কারণ, নৃপেন্দ্র মিশ্র ছিলেন টেলিকম নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (ট্রাই)-এর চেয়ারম্যান। ট্রাই-এর নিয়ম অনুসারে অবসরের পর সরকারি পদ নেওয়া যায় না। বিরোধীরা এ নিয়ে শোরগোল তুললেও নিজের অবস্থান থেকে সরেননি মোদি।
এককথায় উত্তরপ্রদেশ ক্যাডারের এই আইএএস-কে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি হিসেবে নেওয়ার জন্য সমস্ত রকম প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে কখনওই কুণ্ঠাবোধ করেননি। সেই নৃপেন্দ্রর এমন আচমকা ইস্তফাতে টুইট করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্য, ২০১৯ সালের ভোটের ফল প্রকাশের পরেই ‘সেবামুক্ত’ হওয়ার অনুরোধ করেছিলেন নৃপেন্দ্র মিশ্র। কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা না-হওয়া পর্যন্ত তাঁকে ওই পদে থাকার অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রশ্ন উঠেছে, অবসরই যদি চেয়ে থাকেন, তবে লোকসভা ভোটের পরেই কেন ক্যাবিনেট মর্যাদা দিয়ে নৃপেন্দ্র মেয়াদ পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছিল? মোদি সে বিতর্কে না গিয়ে স্মরণ করেছেন, ‘‘২০১৪ সালে দিল্লি ও নৃপেন্দ্র মিশ্র- উভয়ই আমার কাছে নতুন ছিল। কিন্তু তিনি জানতেন দিল্লির শাসন-ব্যবস্থা। পাঁচ বছরে তিনি শুধু আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে সাহায্য করেননি, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতেও আমার সঙ্গী হিসেবে কাজ করে গিয়েছেন।’’ বিবৃতি দেন নৃপেন্দ্র মিশ্রও। বললেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর অধীনে দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞ। পাঁচ বছর ধরে নিয়ত কাজ করেছি। এখন এগোনোর সময়। জাতীয় স্বার্থে মানুষের জন্যই কাজ করব। প্রধানমন্ত্রী দেশকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাবেন।’’ আরও পড়ুন-বিপর্যয়ের মুখে ভারতীয় অর্থনীতি ৬ বছরে জিডিপি নামল ৫ শতাংশে
After serving the PMO assiduously and diligently for over five years and making an indelible contribution to India’s growth trajectory, Shri Nripendra Misra Ji will be embarking on a new phase of his life. My best wishes to him for his future endeavours.
— Narendra Modi (@narendramodi) August 30, 2019
নৃপেন্দ্র মিশ্রের ইস্তফার পরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের (PMO) পদেও রদবদল হয়েছে। বিদায়ী ক্যাবিনেট সেক্রেটারি পি কে সিন্হাকে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি নিয়োগ করা হয়েছে। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গৌবা এখন নতুন ক্যাবিনেট সেক্রেটারি। এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্ত প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্রর পদোন্নতি হবে, নাকি পি কে সিন্হাকে বসানো হবে নৃপেন্দ্রর জায়গায়। বিষয়টি সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে স্পষ্ট হয়ে যাবে।