কলকাতা: গোলকুণ্ডার ১৫ কোটি টাকার ৩২ ক্যারেটের হীরা নিয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াই গত সপ্তাহে শেষ হয়েছে। চুরি যাওয়া গোলকুণ্ডার হীরাটি তার মালিকের কাছে তুলে দেওয়ার সময় বিচারক ঘটনাটিকে 'ফেলুদা' কাহিনীর সঙ্গে তুলনা করলেন। বন্দুক দেখিয়ে ডাকাতি থেকে শুরু করে ব্যর্থ পুলিশ অভিযান সব মিলিয়ে অনেক রহস্য রয়েছে। সত্যজিৎ রায়ের গল্পে দুর্গা প্রতিমার সিংহের মুখের ভিতরে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল হীরা। আর এখানে ডাকাত লুট করা হীরাটি সিঁড়ির নীচে একটি সুইচবোর্ডের (Switchboard) ভিতরে লুকিয়ে রেখেছিল৷
২০০২ সালে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছিল। দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা প্রণব কুমার রায় (হীরাটির মালিক) হীরেটির মূল্য জানতে একজন জহুরী খুঁজছিলেন। ওই বছরের জুন মাসে, হীরার দালাল ইন্দ্রজিৎ তপদার একজন জহুরীকে নিয়ে রায়ের বাড়িতে আসেন। রায় জানান, ওই ব্যক্তি যেভাবে হীরাটির দিকে তাকিয়েছিলেন তাঁর সন্দেহ শুরু হয়, তবে কিছু করার আগেই তপদার পিস্তলটি বের করে হীরাটি নিয়ে নেয়।তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে হীরা নিয়ে পালিয়ে যায়। আরও পড়ুন: Stone Pelting : কেরলে ট্রেনে পাথর ছোঁড়ার ঘটনার তদন্তে এনআইএ
রায় পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার পর পুলিশ গোলকুন্ডা হীরা ছিনতাইয়ের অভিযুক্ত ইন্দ্রজিৎ তপদার কোথায় থাকেন তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। কারণ পুলিশের সন্দেহ করেছিল যে হীরাটি সে তার বাড়িতেই কোথাও লুকিয়তে রাখবে। অভিযুক্তের সন্ধান করে তার বাড়ি তল্লাশি করে, তবে অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তারা হীরাটিকে খুঁজে পায়নি। অবশেষে পুলিশ যখন হাল ছেড়ে দিতে যাচ্ছিল, তখন সিঁড়ির নীচে মিটার বক্সের কাছে সুইচবোর্ডের ভিতরে হীরাটিকে খুঁজে পায়। পুলিশ যতবারই তল্লাশির জন্য গিয়েছিল ততবারই ওই জায়গার পাশ দিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু কেউ সেদিকে খুঁজে দেখেনি। যে পদ্ধতিতে হীরাটি উদ্ধার করা হয়েছিল তা বিচারপতি আনন্দ শঙ্কর মুখোপাধ্যায়কে 'জয় বাবা ফেলুনাথ'-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন।
হীরা বিশেষজ্ঞ শুভদীপ বলেন, “৩২ ক্যারেটের গোলকুন্ডা হীরাটি একটি বিরল হীরা, এটি একটি প্রিমিয়াম হীরা৷ তিনি আরও বলেন, 'গোলকোন্ডাকে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন খনি বলে মনে করা হয়। কোহিনূর এবং শাহজাহানের মতো মর্যাদাপূর্ণ হীরা গোলকুণ্ডার বংশোদ্ভূত।