মুম্বই, ২০ মে: বলিউডের তারকা অভিনেতা পরেশ রাওয়াল (Paresh Rawal) ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে জিতে নরেন্দ্র মোদী-র রাজ্য থেকে বিজেপি-র টিকিটে সাংসদ হয়েছিলেন। তবে বেশীরভাগ সময়ই নিষ্ক্রিয় থেকে, সংসদে তেমনভাবে উপস্থিত না থেকে পরের বার আর টিকিট পাননি বলিউডের জনপ্রিয় কমেডিয়ান-অভিনেতা। নিষ্ক্রিয় সাংসদ হয়ে রাজনীতি ছাড়া বলিউড তারকা পরেশ রাওয়াল এবার বড় দাবি তুললেন। সোমবার দেশজুড়ে চলা পঞ্চম দফার নির্বাচনে মুম্বইয়ে এদিন ভোট দেন হেরাফেরি, ওএমজি-র অভিনেতা। ভোট দিয়ে বেরিয়ে এসে বলিউডের তারকা কমেডিয়ান অভিনেতা দাবি তোলেন, যারা ভোট দিচ্ছেন না, তাদের যেন শাস্তি হিসেবে আরও বেশী করে করে করের বোঝা চাপানো হয় কিংবা অন্য কোনওভাবে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়।"
পরেশ রাওয়ালের এই বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপি নেতারা সমর্থন জানালেও বিরোধীরা সমালোচনা করেছেন। অনেকেই বলছেন, সাধারণ মানুষ ভোট না দিলে যদি শাস্তি দেওয়া হয়। তাহলে একজন সাংসদ সংসদে কম গেলে বা সেখানে গিয়ে সাধারণ মানুষের হয়ে প্রশ্ন না করলে তাদের আরও বড় শাস্তি পাওয়া উচিত। আর সেই শাস্তি পেলে সংসদে নিষ্ক্রিয় পরেশ রাওয়ালের অনেক টাকার কর দিতে হবে। প্রসঙ্গত, ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে গুজরাটে সবচেয়ে ধনী প্রার্থী ছিলেন পরেশ রাওয়াল। আরও পড়ুন-রায়বেরিলিতে রাহুলকে দেখতেই 'গো ব্যাক' স্লোগান, উঠল 'জয় শ্রীরাম ধ্বনিও', দেখুন
দেখুন পরেশ রাওয়ালের বক্তব্য
#WATCH | Bollywood actor Paresh Rawal says, "...There should be some provisions for those who don't vote, like an increase in tax or some other punishment." pic.twitter.com/sueN0F2vMD
— ANI (@ANI) May 20, 2024
দিন কয়েক আগে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভোটদান কম হওয়া নিয়ে ঘুরিয়ে হতাশাপ্রকাশ করেছিলেন।
অস্ট্রেলিয়ার মত কিছু দেশে ভোটদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভোট না দিলে শাস্তির ব্যবস্থাও আছে। কিন্তু অনেক দেশেই, বিশেষত গণতান্ত্রিক দেশে ভোটদান মানুষের ইচ্ছার ওপর ছাড়া হয়েছে। অন্যান্য অনেক দেশের থেকে ভারতে ভোটদানের হার বেশ ভাল। তবে ভারতের মত দেশে সাধারণ মানুষদের ভোট দিতে গিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হয়। আজ, সোমবারই ব্যারাকপুরের এক বুথে দেখা গেল বৃষ্টিতে ভোটাররা ভিজছেন। কোনওরকম তাঁবু বা ছাউনির ব্যবস্থা নেই। তীব্র গরমে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়াটাও বড় চ্যালেঞ্জের। রাজস্থান, বাংলা, বিহার, ওডিশার মত বেশ কয়েকটি জায়গায় ভোটারদের ৪৪-৪৫ ডিগ্রির গরমে চড়া রোদে ভোটের লাইনে দেখা গিয়েছে।
ঘনঘন দলবদল, ভোটের সময় টাকার খেলা, সব কিছুতেই রাজনীতি, প্রতিহিংসার রাজনীতি, ভাল প্রার্থীর অভাব, ভোট প্রচারে সাধারণ মানুষের ইস্যু না তুলে অপ্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে জোর দেওয়ার মত বিষয়গুলি সাধারণ মানুষের একাংশের ভোট না দিতে না যাওয়ার বড় কারণ হয়। ইভিএমে নোটা বা কাউকেই ভোট না দেওয়ার অপশনটাতেও বেশ কয়েকজন তেমন আস্থা দেখান না।
গ্রামাঞ্চলের থেকে মুম্বই, দিল্লির মত বড় শহরের মানুষদের মধ্যেই ভোট দেওয়া নিয়ে বড় অনিচ্ছা দেখা যায়। ভোটের দিনকে তারা নেহাতই একটা ছুটির দিন হিসেবে দেখেন। শহরাঞ্চলের ভোটরাদের মাঝেমাঝেই এই নিয়ে বলতে শোনা যায়," সবাই সমান। ভোট যাকে দেবো, সে দলবদল করবে না কোনও গ্যারান্টি আছে।" নির্বাচন কমিশন ভোটারদের বুথে যাওয়ার জন্য বেশ প্রচার করে। কিন্তু ভোটরাদের ইভিএমে বোতাম টেপার ইচ্ছা বাড়ানোর জন্য রাজনৈতিক দলগুলির সংকীর্ণ রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার কোনও ইচ্ছা চোখে পড়ে না।
প্রসঙ্গত, এবার ভোটের হার গতবারের তুলনায় কম থাকায় কিছুটা আশঙ্কার মধ্যে আছে বিজেপি। কারণ বিজেপি-কে তাদের লক্ষ্যমাত্রা ৩৭৫-৪০০টি আসন পেতে হলে নরেন্দ্র মোদী ঝড় তুঙ্গে থাকতে হবে। ভোটের হার কম থাকা মানে মোদী ঝড়ের গতি কম তা পরিষ্কার। তবে দেশের মানুষদের ভোটদানে উতসাহ করার কথা সবাই বলেন। এদিনও যেমন ভোট দিতে গিয়ে আমির খান থেকে শুরু করে সব ছোট-বড় সেলেবরা বললেন।