নতুন দিল্লি, ১ ফেব্রুয়ারি: তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি (Tehreek-e-Taliban Pakistan) হামলা চালানো বন্ধ না করলে আফগানিস্তানের মাটিতে সার্জিকাল স্ট্রাইক (Surgical Strikes) চালাব, এই ভাষাতই তালিবান (Taliban) সরকারকে সতর্ক করল পাকিস্তান (Pakistan)। রবিবার কাবুল সফরে গিয়ে ইমরান খান সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মোইদ ইউসুফ তালিবানের শীর্ষ নেতৃত্বকে একথা জানিয়েছিলেন। ইউসুফের অভিযোগ, পাকিস্তানের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা সমস্ত টিটিপি শীর্ষ জঙ্গিদের আশ্রয় দিয়েছে আফগানিস্তান।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের পর্যবেক্ষকদের মতে, ইউসুফ তালিবানকে এটাও জানিয়েছেন যে টিটিপি নেতারা বালুচ জঙ্গিদের আফগানিস্তানের কান্দাহার এবং হেলমান্দ প্রদেশের কাছে আস্তানা তৈরি করার অনুমতি দিয়েছে। সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে এক পাকিস্তানি পর্যবেক্ষক বলেছেন, "যেহেতু পাকিস্তানি বাহিনী বালুচ এবং টিটিপি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান জোরদার করেছে, তাই তারা আফগানিস্তানে ডুরান্ড লাইনের ওপারে আশ্রয় নিয়েছে। গত বছরের অগাস্টে তালিবান যখন ক্ষমতায় দখন পাকিস্তান মোস্ট ওয়ান্টেড ব্যক্তিদের একটি তালিকা তাদের হাতে তুলে দেয়।" আরও পড়ুন: Kangana Ranaut: 'কৃষকদের আন্দোলনে উৎসাহ দিয়ে কর্মফল ভুগছেন ট্রুডো', কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে একহাত কঙ্গনার
জবাবে, তালিবান শীর্ষ নেতৃত্ব ইউসুফকে জানিয়েছে যে তারা জঙ্গিদের সমস্ত আস্তানা নির্মূল করছে। কিন্তু তারা কোনও টিটিপি নেতাকে পাকিস্তানের কাছে হস্তান্তর করতে অস্বীকার করেছে। তারা এটাও জানিয়ে দেয় যে আফগান মাটি পাকিস্তান-সহ প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এক পাকিস্তানি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, "তারা (তালেবান) সুবিধা ও মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত। কিন্তু টিটিপি-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে না।"
দুই দিনের সফরে পাকিস্তানি এনএসএ আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানি এবং বিদেশমন্ত্রী আমির মুত্তাকি-সহ কয়েকজন শীর্ষ তালিবান মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। পাকিস্তানি বিদেশ মন্ত্রক বলেছে যে এই সফরে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং সামাজিক ক্ষেত্রে সহায়তার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবে ডুরান্ড লাইন বিরোধ বা টিটিপি নিয়ে কোনও কিছু বিবৃতিতে জানানো হয়নি। আফগান সূত্রের মতে, তালিবান ডুরান্ড লাইনে বেড়া দেওয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ তারা এটিকে আন্তর্জাতিক সীমানা হিসাবে স্বীকার করে না। তবে সীমান্ত ক্রসিং পয়েন্টগুলিতে সুবিধা জোরদার করার জন্য একটি জাতীয় স্তরের সমন্বয় ব্যবস্থা তৈরির জন্য পাকিস্তানের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে।
টিটিপি এবং এই ধরনের অন্যান্য গোষ্ঠী পাকিস্তানের জন্য নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। পাকিস্তানি সাংবাদিক তাহির খান বলেছেন, "পাকিস্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে পাকিস্তানি তালিবান বা তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) আক্রমণ বেড়েছে, তারা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে রাজি হয়নি। তাই এখন হামলা বেড়েছে।