পার্বত্য মুষিক (Photo Credits: Pixabay)

বেজিং, ৬ জুলাই: এমনিতেই বিশ্বজুড়ে বিস্তার লাভ করা মহামারী করোনাভাইরাসের খোঁচায় জেরবার চিন। এই দেশেই প্রথম মারণভাইরাসের দেখা মিলেছিল। তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশ মহামারীর শিকার হওয়ার পর থেকেই চিনকে কোভিডের জন্য দায়ী করে আসছে। তার মধ্যেই সোয়াইন ফ্লুর আতঙ্ক ছড়িয়েছে চিনে। শুয়োরের লালারসে জীবাণুর খোঁজ চলছে হন্যে হয়ে। এদিকে প্রায় কমে আসা সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় চিনে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ছে। তারমধ্যে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের তথ্য বলছে সেদেশের মঙ্গোলিয়া এলাকায় ফের বিউবনিক প্লেগের (Bubonic Plague) উপদ্রব দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেই ২ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাজুড়ে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি হয়েছে।

উল্লেখ্য, চতুর্দশ শতকে এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকায় যে প্লেগ মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছিল সেটা বিউবনিক প্লেগ ছিল বলেই মনে করা হয়। মৃত্যু হয়েছিল প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের। এই প্লেগকে ‘ব্ল্যাক ডেথ’  বলা হয়। হু-র বিশেষজ্ঞরা বলেন, সংক্রমণের চিকিৎসা সঠিক সময় শুরু না হলে রোগীর মৃত্যুও ঘটতে পারে। সংক্রমণ যদি বেশিমাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে তাহলে খিঁচুনি, পেশীর সংকোচন এমনকি রক্তবমিও (Hematemesis) হতে পারে। রোগ কতটা ছড়িয়েছে তার উপর নির্ভর করে এক সপ্তাহ থেকে দশদিনের মধ্যে প্লেগ আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হতে পারে। এই প্লেগ প্রতিরোধের কোনও কার্যকরী টিকা নেই। চিকিৎসার শুরুতে রোগীকে স্ট্রেপটোমাইসিন, জেনটামাইসিন, ডক্সিসাইক্লিন জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। আরও পড়ুন-PUBG Mobile Addiction: PUBG-র জন্য ভার্চুয়াল গোলাবারুদ কিনতে হবে, দাদুর পেনসনের ২ লক্ষ টাকা খরচ করল কিশোর

জানা গিয়েছে, মঙ্গোলিয়ার স্থানীয় বায়ান্নুর এলাকার এক যুবকককে গত শনিবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর শরীরে বিউবনিক প্লেগের জীবাণু মিলেছে। আক্রান্তের বাইয়ের শরীরেও একই উপসর্গ দেখে তাঁকে পৃথক একটি হাসপতালে ভর্তি করা হয়েছে। দু’জনের সংস্পর্শে আসা ১৪৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রত্যেকেরই লালারসের নমুনা টেস্টের জন্য পাঠানো। চিনের বিভিন্ন এলাকার লোক পার্বত্য অঞ্চলের ইঁদুর খেয়ে থাকে। এই রোগ ব্যাকটেরিয়া থেকে ছড়ায়। মনে করা হচ্ছে আক্রান্ত ২ জন ইঁদুর খেয়েছিলেন দিন কয়েক আগেই। গত মে মাসেই মঙ্গোলিয়া এলাকার বেশ কয়েকজনের শরীরে বিউবনিকের জীবাণু মেলে। রোগে ভুগে তাদের মৃত্যু হলে জানা যায়, দিন কয়েক আগেই পার্বত্য ইঁদুরের কাঁচা কিডনি খেয়েছে তারা। শোনা যায়, লোককথা অনুসারে এতে নাকি রোগ সেরে যাবে। তবে এরপরেই প্রত্যেকে বিউবনিক প্লেগের কবলে পড়ে। আরও দুজন নিউমোনিক প্লেগেও আক্রান্ত হন। ফের ওই এলাকায় বিউবনিক প্লেগের সংক্রমণ ছড়ালো।