Credits: theatlantic.com

সারা বিশ্বে অনেক ধরনের গুরুতর এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত দশকের পরিসংখ্যান দেখলে দেখা যায় যে উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ শর্করা এবং ক্যান্সারের মতো গুরুতর ও মারাত্মক রোগের শিকার হচ্ছে ৩০ বছরের কম বয়সী মানুষ। জীবনযাত্রা এবং খাদ্যাভ্যাসের অনিয়ম এই রোগগুলির প্রধান কারণ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ধূমপান হল সবচেয়ে সাধারণ অভ্যাস যা স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। এই একটি অভ্যাস প্রায় ৩০টি রোগের কারণ হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, সুস্বাস্থ্যের জন্য ধূমপান থেকে দূরে থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ধূমপান করার পর ত্যাগ করলেও অনেক রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমতে পারে। এছাড়া ধূমপান ছাড়ার এক দিনের মধ্যেই শরীরে অনেক ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে।

গবেষণায় দেখা গেছে যে ধূমপানের বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং শ্বাসকষ্ট। ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ধূমপানকে প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। ধূমপান হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং পেরিফেরাল আর্টেরিয়াল ডিজিজ (PAD) এর ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে। পিএডি হল এমন একটি অবস্থা যেখানে ধমনীতে প্লাক তৈরি হয়, যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। ধূমপান দীর্ঘস্থায়ী ব্রঙ্কাইটিস, দীর্ঘস্থায়ী অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) এবং হাঁপানির মতো রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এই একটি অভ্যাস মুখের স্বাস্থ্য, উর্বরতা এবং শারীরিক সুস্থতার উপর প্রভাব ফেলে। ধূমপান ত্যাগ করলে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে শরীরে। এটি বন্ধ করার কয়েক ঘন্টার মধ্যে শরীরে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে শুরু করে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ধূমপান ত্যাগ করলে রক্তচাপ কমে এবং ফুসফুস ও হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে। ধূমপান ত্যাগ করার অর্থ হল আসক্তির চক্র ভেঙে ফেলা এবং নিকোটিনের প্রতি আসক্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য মস্তিষ্ককে পুনর্নির্মাণ করা। এই কারণেই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সকলকে এই অভ্যাস থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন।

গবেষণায় দেখা গেছে যে ধূমপান ত্যাগ করার ২০ মিনিটের মধ্যেই হৃদস্পন্দনের গতি কমে যায় এবং স্বাভাবিক হতে শুরু করে। রক্তচাপ কমানো এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করা হৃদরোগের জন্য ভালো বলে মনে করা হয়। সিগারেটে ৭,০০০ এরও বেশি রাসায়নিক থাকতে পারে, যার মধ্যে ২৫০ টি ক্ষতিকারক বলে বিবেচিত হয়। ১২ ঘন্টা ধূমপান না করার মাধ্যমে, শরীর নিজে থেকেই অতিরিক্ত কার্বন মনোক্সাইড পরিষ্কার করতে শুরু করে। কার্বন মনোক্সাইডের মাত্রা স্বাভাবিক হওয়ার ফলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ধূমপান ত্যাগ করার মাত্র একদিন পরেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আগের তুলনায় কমে যায়। ধূমপানের ফলে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়, যা হৃদপিণ্ডের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। ধূমপান রক্তচাপ বাড়ায় এবং রক্ত জমাট বাঁধার সৃষ্টি করে, যা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। ধূমপান ত্যাগ করার মাত্র এক দিনের মধ্যেই একজন ব্যক্তির রক্তচাপ কমতে শুরু করে, যা হৃদরোগের সমস্যা কমাতে পারে। ধূমপানের অভ্যাসটি গন্ধ এবং স্বাদ অনুভব করানোর জন্য স্নায়ুর জন্যও ক্ষতিকারক। ধূমপান ত্যাগ করার মাত্র ২ দিনের মধ্যেই স্বাদ এবং ঘ্রাণশক্তি উন্নত হতে পারে।