ওয়াশিংটন, ১০ ডিসেম্বর: মঙ্গলবার রাতারাতি লোকসভায় (Lok Sabha) পাশ হয়ে গিয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯ (Citizenship Amendment Bill, 2019)। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে ওই বিল পাশ করিয়ে নিয়েছে মোদি সরকার। কিন্তু তা নিয়ে ঘরে-বাইরে তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে, ওই বিলে ধর্মীয় বৈষম্যকে মান্যতা দেওয়ায় খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি করল ইউএস কমিশন (US Commission)।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও দেশের শীর্ষস্থানীয় বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রীদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি ওঠে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। লোকসভার পর এবার রাজ্যসভায় বিলটি পাশ হওয়ার অপেক্ষা। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলেও, সেখানেও বিলটি পাশ করিয়ে নেওয়া যাবে বলে আত্মবিশ্বাসী মোদি সরকার। তাতেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ)। তাঁদের মতে, ওই বিলে নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় মানদণ্ড বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। সোমবারই সংগঠনের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি পেশ করেছেন, তাতে ধর্মীয় মানদণ্ড বেঁধে দেওয়ায় ইউএসসিআইআরএফ ভীষণ উদ্বিগ্ন। সংসদের দুই কক্ষে বিলটি যদি পাশ হয়ে যায়। তাহলে অমিত শাহ সহ সে দেশের অগ্রগণ্য নেতাদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো উচিত মার্কিন সরকারের।’ নাগরিকত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ধর্মীয় মানদণ্ড বেঁধে দেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক বলেও মন্তব্য করে ইউএসসিআইআরএফ। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক মোড়, যা ভুল পথে এগোচ্ছে। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ, বহুত্ববাদী ইতিহাস এবং সে দেশের সংবিধান, যা কি না ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমানাধিকারের কথা বলে, এই বিল তার পরিপন্থী।’ এদিকে তাদের ওই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে ভারতের বিদেশমন্ত্রক। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার (Ravish Kumar) এদিন টুইটারে একটি বিবৃতি পোস্ট করে লেখেন, ‘ইউএসসিআইআরএফ-এর দাবি সম্পূর্ণ ভুল। পক্ষপাতদুষ্ট মন্তব্য করেছেন তারা। ওরা বিষয়টি সম্পর্কে ভাল মতো ওয়াবিহালও নয়। এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের অধিকারও নেই ওদের।’ আরও পড়ুন: Ajoy Roy Passes Away: ৮৪-তেই ইতি, চলে গেলেন বাংলাদেশের গণজাগরণের পথিকৃৎ অধ্যাপক অজয় রায়
উল্লেখ্য তাঁদের সুপারিশ (Recommendation) মানতে বাধ্য নয় কোনও দেশই। তবে মার্কিন মুলুকে তাদের রিপোর্টের অসীম গুরুত্ব রয়েছে। ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে কোনও দেশ বা ব্যক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো যায় কিনা, ইউএসসিআইআরএফ-এর রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন বিদেশ দফতর।