বাংলাদেশের শিক্ষাবিদ অজয় রায় (Photo Credit: Social Media)

ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর: প্রথমে স্বাধীনচেতা ছেলে পরে স্ত্রী, দুই প্রিয়জনের চলে যাওয়াকে মেনে নিতে পারেননি বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ অজয় রায় (Professor Ajoy Roy)। সোমবার ৮৪ বছর বয়সে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে ইহলোক ত্যাগ করলেন এই প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবী। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। বছর পাঁচেক আগে ২০১৫-র ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(Dhaka University) টিএসসি-র উল্টোদিকে নৃশ্ংসবাবে খুন হন একমাত্র ছেলে তথা বাংলাদেশের মুক্তমনা ব্লগার অভিজিৎ রায় (slain blogger-writer Avijit Roy)। ছেলের এই হত্যাকাণ্ড মেনে নিতে পারেননি অধ্যাপক। বিচারের দীর্ঘসূত্রীতার কারণে ছেলের হন্তারকদের সাজাও শুনে যেতে পারলেন না তিনি। বেশ কয়েকদিন ধরেই বারডেম হাসপাতালের আইসিইউ-তে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। শেষ ইচ্ছা মেনে অধ্যাপকের দেহ ওই হাসপাতালেই দান করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, শিক্ষায় বিশেষ আবদানের জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান একুশে পদক পেয়েছেন অজয় রায়। ১৯৫২-র ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া অজয় সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের নানা অভিযানে শামিল হন। স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। ‘মুক্তমনা’ ব্লগ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন গণবিজ্ঞান ও কুসংস্কার-বিরোধী লেখক অজয় রায়, পরে যার দায়িত্ব তুলে নেন ছেলে অভিজিৎ। ছিলেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।  আরও পড়ুন-Two Pigs With Monkey Cells: প্রাণী বিজ্ঞানের যুগান্তকারী ঘটনা, হনুমানের কোষ থেকে শূকর ছানার জন্ম হল চিনে

১৯৩৫ সালের ১ মার্চ দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন অজয় রায়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের প্রায় সব গণতান্ত্রিক ও নাগরিক আন্দোলনের পুরোধা পুরুষ তিনি। স্কুল ও কলেজজীবনে অজয় রায় পড়াশোনা করেছেন দিনাজপুরে। ১৯৫৭ সালে এমএসসি পাস করে যোগ দেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। তিনি ১৯৫৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন। এরপর ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পূর্ণ করেসেখানেই ১৯৬৭ সালে পোস্ট ডক্টরেট করেন। ওই বছরই দেশে ফিরে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এরপর বাকী কর্মজীবনে তিনি সেখানেই অধ্যাপনা করেছেন।