বাংলাদেশ সরকার জুলাই থেকে ২০২৩-২৮ অর্থবর্ষের জন্য রেকর্ড ৭.৬২ ট্রিলিয়ন টাকা (৭১ বিলিয়ন ডলার) জাতীয় বাজেট ঘোষণা করেছে। চলতি অর্থবর্ষে বাজেটে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৭.৫ শতাংশ করার পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। মূল্যস্ফীতি মোকাবেলা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং "স্মার্ট বাংলাদেশ" এর ওপর গুরুত্বারোপ করে অর্থমন্ত্রী এএইচএম মুস্তফা কামাল সংসদে বাজেট উপস্থাপন করেন। সংসদে বাজেটে ড. কামাল বলেন, 'সব মিলিয়ে, আমরা আশা করছি, আগামী অর্থবছরে উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরতে পারব এবং ৭.৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারব, উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে উদ্দীপিত করার মাধ্যমে।' ব্যয় বাজেটের মোট আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬২ হাজার কোটি বাংলাদেশী টকা, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির মোট জিডিপি ১৫.২ শতাংশ। Bangladesh: সরকারি চাকরিজীবীদের প্রথম শ্রেণির ভ্রমণ নিষিদ্ধ করল বাংলাদেশ
এ লক্ষ্যে আগামী অর্থবছরের বাজেটে সরকারি বিনিয়োগ জিডিপির ৬.৩ শতাংশে উন্নীত করার উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে অসামঞ্জস্য দূর করে মূল্যস্ফীতির ক্রমবর্ধমান প্রবণতা রোধে সরকার বদ্ধপরিকর। বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আগামী অর্থবর্ষে বাংলাদেশ গড় মূল্যস্ফীতির হার ৬.৫ শতাংশ নির্ধারণ করছে। কামাল বলেন, মূলত বাইরের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে দাম বেড়েছে। মন্ত্রী আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়লেও সরকার মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং জনগণের ওপর এর প্রভাব কমানোর জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জ্বালানি তেলের দাম কমার কারণে, বিশ্ববাজারে খাদ্য ও সার, পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাজারে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় এবং খাদ্য ও সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে সরকারি উদ্যোগ, আগামী অর্থবছরেও মূল্যস্ফীতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে মনে করেন তিনি।
ভূরাজনৈতিক ঝুঁকির মধ্যে ড. কামাল বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের প্রস্তাবিত বাজেটের মোট ব্যয় বিদায়ী অর্থবর্ষের মূল বাজেটের চেয়ে ১২.৩৪ শতাংশ বেশি। প্রস্তাব অনুযায়ী, মোট বাজেট ঘাটতি হবে ২ লক্ষ ৫৮ হাজার কোটি টকা, যা জিডিপির ৫.২ শতাংশ। কামাল বলেন, মোট আনুমানিক রাজস্ব ৫ ট্রিলিয়ন টকার বেশি হবে। তিনি বলেন, আগামী অর্থবর্ষের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার হবে ২ লক্ষ ৭৮ হাজার কোটি টকা। ১৯৭২-৭৩ অর্থবর্ষের ৭৮৬ কোটি টকার প্রথম বাজেট থেকে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজেট।